‘প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে দেশ ছেড়ে পালাব না’, ইডি প্রসঙ্গে মেজাজ হারালেন রবার্ট


তিনি নীরব মোদি বা বিজয় মালিয়া নন। গান্ধী পরিবারের কন্যা প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে দেশ ছেড়ে পালাবেন না তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে চলা ইডির তল্লাশি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মেজাজ হারিয়ে এমনই জানালেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী রবার্ট বঢরা। যদিও নীরব মোদি বা মালিয়ার নাম করেননি তিনি৷ কিন্তু ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সোনিয়া গান্ধীর জামাইয়ের কথায় স্পষ্ট যে, তিনি ঠিক কী ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন৷

জমি কেনা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে ইডি। বুধবার রবার্টের অফিসেও তল্লাশি চালান ইডির কর্তারা। এরপরই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর জামাইবাবু। তিনি বলেন, "আমি কোনও ভুল করিনি। আমরা আইনের বাইরে গিয়ে কোনও কাজ করিনি। আইন মোতাবেক সব কিছু করেছি। ইডির তদন্তে সাহায্য করছি। আমি ভারতীয় নাগরিক। আমি কোথাও পালিয়ে যাচ্ছি না।" এখানেই শেষ নয়, ইডির তদন্তের উপরেও প্রশ্ন চিহ্ন তোলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী৷ তদন্ত স্বচ্ছ ভাবে হওয়া উচিত বলে দাবি করেন তিনি৷

বুধবারই দেশের তিন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে জয় পেয়েছে কংগ্রেস। বিজেপির গড়েই তাঁদের গেরুয়া রঙ কার্যত মুছে দিয়েছেন কংগ্রেসে সভাপতি রাহুল গান্ধী৷ কংগ্রেসের একাংশের অভিযোগ, গান্ধী পরিবারকে চাপে রাখতেই কেন্দ্র রবার্টকে ফের টার্গেট করছে। যদিও ইডির বঢরাকে জেরা বা তল্লাশি প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা। কোনও মন্তব্য করেননি সোনিয়া—রাহুলও। সূত্রের খবর, বঢরার ইস্যু তুলে লোকসভা নির্বাচনের আগে গান্ধী পরিবারকে কোণঠাসা করার রণকৌশল রচনা করেছে বিজেপি। কয়েকদিন আগেই গান্ধী পরিবার ও রবার্ট বঢরার ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি৷ যা নিয়ে ইডির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল কংগ্রেস। তাঁদের দাবি ছিল, 'প্রতিহিংসা' চরিতার্থ করতেই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে এই তল্লাশি করাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ৷ যদিও কংগ্রেসের সেই অভিযোগকে তেমন একটা পাত্তা দেয়নি গেরুয়া শিবির৷

প্রসঙ্গত, গুরুগ্রামে জমি কেনাবেচা নিয়ে গড়মিল করায় ইতিমধ্যেই বঢরার বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে এফআইআর৷ স্কাই লাইট হসপিটালিটি নামে একটি সংস্থার সঙ্গে যোগ রয়েছে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী শিল্পপতি রবার্ট বঢরার৷ অভিযোগ, শিখোপুর, সিকন্দরপুর, খেদকি দউলা ও সিহি এলাকায় জমি কিনেছে ওই সংস্থাটি। এর জন্য তাঁদের ব্যয় হয় ৭.৫ কোটি টাকা৷ কিন্তু ওই জমিগুলি বিক্রি করা হয় ৫৫ কোটি টাকায়। এখানেই শেষ নয়, আরও অভিযোগ রয়েছে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে৷ জানা গিয়েছে, ২০১০-১১ অর্থবর্ষে এই সংস্থা নিজেদের আয়কর রিপোর্টে দেখিয়েছিল তাদের বার্ষিক আয় ৩৬.৯ লক্ষ  টাকা৷ কিন্তু পরে তদন্তে উঠে আসে অন্য তথ্য৷ জানা যায়, ২০১০-১১ অর্থবর্ষেই ৪২.৯৮ কোটি টাকা আয় করেছে সংস্থাটি৷ তারপরেই ওই সংস্থাকে ২৫ কোটি টাকার আয়কর জমা করার নির্দেশ দিয়েছিল আয়কর দপ্তর৷ কিন্তু তেমনটা করেননি তিনি৷ তারপর থেকেই চলছে তদন্ত৷