‌শিলিগুড়ি থেকে রংটং, শুরু টয় ট্রেনে সন্ধেয় জঙ্গল সফর


শিলিগুড়ি: টয় ট্রেনে এবার সান্ধ্যকালীন জঙ্গল সাফারির সুযোগ। শিলিগুড়ি থেকে পাহাড়ের কোলে পৌঁছে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে আবার ফেরা যাবে শহরে। এই পথে যেতে ও আসতে ৩ ঘণ্টার সফর। মাত্র ১৭ কিমি পথে বিনোদন দিতে চালু করা হল শিলিগুড়ি–রংটং জঙ্গল সাফারি। ডাইনিং কোচ ও ফার্স্ট ক্লাস— এই দুটি বগি নিয়ে রবিবার থেকে যাত্রা শুরু হল খেলনা ট্রেনের। সমতলকে পেছনে ফেলে হাতছানি দিতে দিতে পৌঁছবে সুকনার পর আরেক পাহাড়ি স্টেশন রংটংয়ে। কু‌–‌ঝিক–‌ঝিক সেই ট্রেনের যাত্রার সূচনা করলেন উত্তর–পূর্ব সীমান্ত রেলের ডিআরএম চন্দ্রপ্রকাশ গুপ্তা। এই সান্ধ্যকালীন পরিষেবা দিয়ে পর্যটক টানতে চাইছেন দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। হেরিটেজ ট্রেনের নতুন এই পরিষেবা নিয়মিত করা হবে বলে জানান ডিআরএম। উদ্দেশ্য একটাই, দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়েকে পরিচিতি দেওয়া।

জঙ্গল সাফারিতে জুড়ছে কয়লা তথা ইস্টিম ইঞ্জিন। দুটি বগিকে টেনে নিয়ে যাবে এই ইঞ্জিনটি। ডাইনিং কোচে ১৩ জন বসে যেতে পারবেন। যাওয়া–‌আসার ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১২০০ টাকা। ফার্স্ট ক্লাসে রয়েছে গদিযুক্ত চেয়ার। এই কোচে যেতে–আসতে যাত্রী–প্রতি ভাড়া নির্ধারিত করা হয়েছে ১০০০ টাকা। পর্যটকেরা ডাইনিং কোচে জলখাবার পাবেন। মিলবে চা, কফি, স্ন্যাকস। রীতিমতো কাঠের চেয়ার–টেবিলে বসে মনভোলানো অনুভূতি নিতে নিতে পৌঁছবেন রংটং। একইরকম ভ্রমণের সুবিধা পেলেও ফার্স্ট ক্লাসে জলখাবারের ব্যবস্থা নেই।

 ঠিক হয়েছে প্রতিদিন বিকেল ৩টায় ট্রেনের যাত্রা শুরু হবে শিলিগুড়ি জংশন থেকে। ৩টে ৫০ মিনিটে পৌঁছে যাবে রংটং। এরপর সেখানে কিছুটা সময় কাটিয়ে ৪টে ২০ মিনিটে আবার ফেরার ট্রেনে চাপতে হবে। পাহাড় থেকে প্রায় হাঁটার গতিতে ট্রেনটি সুকনা হয়ে হেলতে–দুলতে শিলিগুড়ি নামবে ৫টা ৫৫ মিনিটে। রবিবার প্রায় ১৫ জন এই যাত্রার সাক্ষী থাকলেন। তাঁরা শিলিগুড়ি জংশন থেকে সুকনা হয়ে পৌঁছে গেলেন রংটং। যেতে যেতে বহু জাগায় নেমে ছবি তোলার সুযোগ পেলেন। পর্যটকেরা পাহাড়ের এক বাঁকে নেমে অন্য বাঁকে গিয়ে ফের ট্রেনে উঠতে পারলেন। দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের পাহাড়ে আরও বেশ কিছু পরিষেবা রয়েছে। এখন নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত টয় ট্রেন পরিষেবা রয়েছে। পাহাড়ি পথে কার্শিয়াং থেকে দার্জিলিং চলে। তবে সমতল থেকে এমন ছোট পথের যাত্রা আগে ছিল না। শিলিগুড়ি কিংবা উত্তরবঙ্গে ঘুরতে আসা পর্যটকদের কথা ভেবেই এই সান্ধ্যকালীন যাত্রা বলে জানান ডিআরএম চন্দ্রপ্রকাশ গুপ্তা।

রেল সূত্রে জানা গেছে, বছরে টয় ট্রেন পরিষেবা দিতে খরচ হয় অন্তত ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা। টিকিট বিক্রি করে রেলের উঠে আসে মাত্র ৪ থেকে ৫ কোটি টাকা। এরপরও হেরিটেজের খাতায় নাম লেখানো এই ট্রেনের পরিষেবা দিয়েই চলছে রেল। কারণ ব্রিটিশদের রেখে যাওয়া এই খেলনা রেলগাড়ি শৈলরানির মাথার একটি পালক। দেশ–বিদেশের অনেক পর্যটক শুধু এই রেলগাড়ির টানেই ছুটে আসেন শিলিগুড়িতে। 

কাটিহারের ডিআরএম চন্দ্রপ্রকাশ গুপ্তা বলেন, আমরা চাইছি ইতিহাসকে ধরে এগোত। টয় ট্রেনই পরিচিতি দিক উত্তর–পূর্ব সীমান্ত রেলকে।