মাদ্রাসার পরীক্ষায় বসতে বাধা স্বামীর, আত্মঘাতী হলেন নববধূ


অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরও নববধূর ইচ্ছা ছিল উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার। চেয়েছিল মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে। তাই এবার পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতিও নিয়েছিল সে। কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে সম্মতি ছিল না তার পড়াশোনায়। তাই শেষ পর্যন্ত শ্বশুরবাড়ির পারিবারিক অশান্তির জেরে স্বামী পরীক্ষায় বসতে বাধা দেয়। কিন্তু বধূ পরীক্ষায় বসার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল। তাই আত্মহত্যার পথই শেষ পর্যন্ত বেছে নিল সেই বধূ। শ্বশুরবাড়িতে অশান্তির ঘটনা ঘটলেও একই পাড়ায় বাপের বাড়ি হওয়ায় তিনি বাপের বাড়িতে গিয়েই আত্মঘাতী হয়েছেন।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তঁার মৃত্যু হয়। মৃত বধূর নাম আঞ্জু খাতুন (১৫)। মঙ্গলকোট হাই মাদ্রাসা থেকে এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল তঁার। বধূর বাপের বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ি মঙ্গলকোটে। এই মৃত্যুর খবর পৌঁছতেই শোকের ছায়া নেমে আসে মঙ্গলকোট এলাকায়। মৃত বধূর বাবা উজ্জ্বল চৌধুরি পুলিসের কাছে বলেছেন, '‌মাস ছয়েক আগে মেয়ের বিয়ে হয়েছিল নিজের গ্রামের পাশের পাড়ার যুবক নয়ন মল্লিকের সঙ্গে। এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিত। তা নিয়ে কোনও কারণে তার সঙ্গে শ্বশুরবাড়িতে অশান্তি হয়। গতকাল মেয়েকে রান্না করতে বলেছিলেন শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। কিন্তু মেয়ে পড়াশোনার জন্য রান্নার কাজ করেতে চায়নি। তা নিয়ে অশান্তি হয়। সেই অশান্তি চরমে উঠলে সে বাপের বাড়ি পালিয়ে আসে। এখানে এসে কাউকে কিছু না বলেই গলায় ফঁাস দিয়ে ঝুলে আত্মঘাতী হয়।'‌

প্রতিবেশীরাও পুলিসকে জানিয়েছেন, মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে বলে বধূ প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু তার স্বামী নয়ন তাকে এবার পরীক্ষা দিতে বাধা দিচ্ছিল। তা নিয়ে ওই পরিবারে অশান্তি তৈরি হয়। গতকাল সেই অশান্তি চরম আকার নিলে সে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে বলে তঁারা বলেছেন। লেখাপড়া করতে চেয়ে বধূর এমন আত্মহত্যার ঘটনায় এলাকায় রীতিমতো শোকের ছায়া নেমে আসে। অন্যদিকে, নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ না হওয়ায় চম্পা হঁাসদা নামে এক ছাত্রী বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে খণ্ডঘোষ থানার শঁাকারি গ্রামে। শঁাকারি হাইস্কুলের নবম শ্রেণিতে পড়ত সে। গতকাল স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার মার্কশিট বেরোনোর পর দেখা যায় সে অনুত্তীর্ণ হয়েছে। এতে মানসিক অবসাদে ভেঙে পড়ে। বাড়ি ফিরে এসে বিষ খেয়ে অত্মঘাতী হয়। মেয়ের মৃত্যুতে পরিবারের সদস্যরা রীতিমতো হত‌বাক। তঁারা ভাবতেই পারছেন না, মেয়ে আত্মহত্যার মতো চরম পথ বেছে নিয়েছে।