ফিরল ভয়াবহ দিনের স্মৃতি, গঙ্গাবক্ষে উদ্ধার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বোমা


সালটা ছিল ১৯৪২৷ ইউরোপ জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে হিটলারের নাৎসি বাহিনী৷ জ্বলছে এশিয়া মহাদেশও৷ সীমানা বিস্তারে যুদ্ধের দামামা বাজিয়েছে হিরোহিতোর জাপান৷ 'ইম্পেরিয়াল জাপানিজ আর্মি'র দাপটে কাঁপছে মিত্রশক্তি৷ ফিলিপিন্সে জাপানি সেনার সামনে মাথা নত করেছেন মার্কিন জেনারেল ডগলাস ম্যাকার্থার৷ ব্রিটিশ দম্ভ গুঁড়িয়ে দিতে ভারতের দিকেও নজর দিয়েছেন সম্রাট হিরোহিতো৷ তারপর এল সেই দিন, ৪২-এর ২০ ডিসেম্বর ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে এল জাপানি বোমারু বিমান৷ মহানগরীর বুকে আছড়ে পড়ল একের পর এক বোমা৷ বাকিটা ইতিহাস৷ তা অতীতের ছাপ যে সহজে মেটার নয়, তা ফের প্রমাণিত হল৷ গঙ্গাবক্ষ থেকে উদ্ধার হল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আমলের বোমা৷

কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, কলকাতা বন্দরের নেতাজি সুভাষ ডকে ড্রেজিং চলার সময় বোমাটি উদ্ধার করা হয়৷ সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি পুলিশে জানানো হয়৷ তারপরই এলাকাটি ঘিরে ফেলে সিআইএসএফ৷ ঘটনাস্থলে পৌঁছান সেনা ও নৌসেনার আধিকারিকরা৷ নৌসেনা আধিকারিক কোমোডর সুপ্রভ কে দে জানান, বোমাটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আমলের৷ কোনও জাহাজ বা বিমান থেকে এটি পড়ে গিয়ে থাকতে পারে৷ তিনি আরও জানান, বিস্তারিত পরীক্ষা করে জানা যাবে বোমাটি কীভাবে নদীতে এল, বা কাদের তৈরি৷ ইতিমধ্যে বোমাটিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ ইন্ডিয়ান অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরির বিশেষজ্ঞরা বোমাটিকে পরীক্ষা করে দেখবেন বলেও জানা গিয়েছে৷ বোমাটিকে নিষ্ক্রিয় করে জাদুঘরে রাখা হতে পারে৷ গঙ্গাবক্ষে এমন আরও বোমা থাকতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে৷

উদ্ধার হওয়া বোমাটির ওজন প্রায় ৫০০ কিলোগ্রাম৷ লম্বায় ৫ ফুট, চওড়া চার ফুট৷ বোমাটির উপর ইংরেজি হরফে কিছু একটা লেখা৷ সেই সূত্র ধরেই বোমাটির নির্মাতাকে তা জানা যাবে৷ বিশেষজ্ঞদের মতে জাপানি হামলা প্রতিহত করতে সেই সময় কলকাতায় বিশাল অস্ত্র ভাণ্ডার মজুত করেছিল ব্রিটিশ ও মার্কিন ফৌজ৷ বোমাটি তাদেরই হওয়ার সম্ভাবনা বেশি৷ তবে জাপানি বোমারু বিমান থেকেও বোমাটি নিক্ষেপ করা হতে পারে৷ সব মিলিয়ে বিশালাকৃতি বোমাটির জেরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে৷