মারধর, গোপনাঙ্গে লঙ্কার গুঁড়ো, দিল্লির হোমে চলত এভাবেই কিশোরীদের ওপর অত্যাচার


বিহারের পর এবার দিল্লি। আশ্রয়ের নামে অত্যাচার। দিনের পর দিন কিশোরীদের মারধর, গোপনাঙ্গে লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে নির্যাতন চলছিল দিল্লির একটি হোমে। দিল্লির মহিলা কমিশনের উদ্যোগে সামনে এল হোমের বাস্তব ছবি। যেখানে প্রায় অর্ধ মৃত অবস্থায় ২২ জন নাবালিকাকে উদ্ধার করেছে পুলিস। শুক্রবার দিল্লির দ্বারকার সেই হোমে তল্লাশি চালায় পুলিস। সঙ্গে ছিল দিল্লি মহিলা কমিশনের সদস্যরা। উদ্ধার হওয়া মেয়েদের প্রত্যেকের বয়স ৬ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে।

হোমের উচ্চ পদস্থ মহিলা কর্মচারীরা কিশোরীদের উপর এই অত্যাচার চালাচ্ছিল বলে অভিযোগ। জেরা করতেই সামনে আসে মারাত্মক কয়েকটি ঘটনা। কিশোরীদের বয়ানেও হোমের অমানবিক ছবি স্পষ্ট হয়। গরিব বাড়ির মেয়েদের হোমে এনে রাখা হত। মহিলা পরিচালিত ওই হোম মেয়েদের পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছিল। অভাবের কারণেই বাড়ি ছেড়ে দুই বেলার খাবার ও পড়াশোনা করতে হোমে এসে থাকতে শুরু করে বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা মোট ২২ জন কিশোরী। কিন্তু পড়াশোনা তো অনেক দূর, অভিযোগ তাদের দিয়ে রান্নার কাজ, বাসন মাজা, ঘর পরিষ্কার সহ সমস্ত কাজ করানো হত। কোনও রকমে জুটত এক বেলার খাবার। পড়াশোনা করতে চাইলে রেহাই করা হত না ছয় বছরের শিশুকেও। চলত বেধড়ক মার, গরম খুন্তির ছ্যাঁকা। কিন্তু, অত্যাচার চরমে পৌঁছায় কয়েক মাস আগে। কিশোরীদের অভিযোগ, ঘরে ডেকে তাদের গোপনাঙ্গে লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে অত্যাচার চালাতো মহিলা কর্মীরা। তাদের লঙ্কার গুঁড়ো খেতেও বাধ্য করা হত।

দিল্লি মহিলা কমিশন জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবারই হোম থেকে তাদের কাছে একটি ফোন আসে। বলা হয়, বেশিদিন এখানে থাকলে মারা পড়বে শিশু–কিশোরীরা। ফোন পেয়েই দ্বারকা পুলিসকে খবর দেয় কমিশন। শুক্রবার রাত ৮টার সময় হঠাৎ হোমে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। আটক করা হয় হোমের মহিলা কর্মীদের। দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়াল জানাচ্ছেন, রাজধানীর অলি–গলিতে গজিয়ে ওঠা এই ধরণের হোম থেকেই শিশু পাচার হচ্ছে। হোমের ভিতরেও চলছে বেআইনি কার্যকলাপ। তদন্তের কারণেই দ্বারকার এই হোমের নাম প্রকাশ করা হয়নি। খতিয়ে দেখা হচ্ছে এই ধরণের বেআইনি কার্যকলাপ দ্বারকার হোমে চলছিল কি না। বাজেয়াপ্ত হয়েছে হোমের কাগজ–পত্র। আপাতত দিল্লির বুকে বেআইনি হোমের খোঁজ চলছে, দিল্লি পুলিসের সঙ্গে তল্লাশি অভিযানে  মহিলা কমিশনও রয়েছে।