কলির যুধিষ্ঠির! জুয়ায় হাজার কোটি খুইয়ে দেউলিয়ার পথে জিওনি কর্তা, বন্ধ হতে পারে সংস্থা


দেউলিয়া ঘোষণা হতে পারে জিওনি।
সস্তায় বাজারে ছেড়ে ভারতে স্মার্ট ফোনের ভালই ব্যবসা করছিল জিওনি। চাহিদাও ছিল ঊর্ধ্বমুখী। কিন্তু কাল হল সংস্থার কর্তার জুয়ার নেশা। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়িয়েছে, গণেশ ওল্টাতে পারে চিনা এই স্মার্ট ফোন প্রস্তুতকারী সংস্থার। বন্ধ হয়ে যেতে পারে জিওনির ফোন উৎপাদন এবং বিক্রি।

সম্প্রতি একটি ক্যাসিনোতে জিওনির চেয়ারম্যান লিউ লিরং জুয়ায় বিপুল অঙ্কের টাকা হেরে যাওয়ায় এই সম্ভবনা তৈরি হয়েছে। আটকে গিয়েছে বহু সংস্থার পাওনা। বাধ্য হয়ে চিনের আদালতে জিওনিকে দেউলিয়া  ঘোষণার আর্জি জানিয়েছে অন্তত ২০টি পাওনাদার সংস্থা।

কার্যত মহাভারতের যুধিষ্ঠিরের অবস্থা জিওনি কর্ণধার লিউ লিরংয়ের। চিনের সাইপানের একটি ক্যাসিনোতে জুয়ায় ১৪ কোটি ৪৪ লক্ষ মার্কিন ডলার হেরে কপর্দক শূন্য অবস্থা তাঁর। ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় এক হাজার আট কোটি টাকা। আর এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। জিওনিকে দেউলিয়া ঘোষণা করতে পারে আদালত। বন্ধ হয়ে যেতে পারে সংস্থার স্মার্ট ফোন তৈরি ও বিক্রি।

জুয়ায় হারের ফলে সংস্থার কাঁচামাল, প্রযুক্তি ও অন্যান্য সরবরাহকারীদের পাওনা বকেয়া পড়ে গিয়েছে। নতুন করে আর কোনও টাকা দেওয়া হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে ২০টি পাওনাদার সংস্থা চিনের শেনঝেন ইন্টারমিডিয়েট পিপল্‌স কোর্ট-এ সংস্থাকে দেউলিয়া ঘোষণার আর্জি জানিয়েছে।

জুয়ায় হারের কথা স্বীকার করে নিয়েও লিরং জানিয়েছেন, সংস্থার টাকা তিনি ব্যবহার করেননি। আবার এ-ও বলেছেন, সংস্থার জন্য নতুন 'ফান্ড' জোগাড় করা যেতে পারে। ফলে জিওনির টাকা ব্যবহার করা নিয়ে লিরংয়ের দাবির সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই মনে করছেন, পাওনাদার এবং গ্রাহকদের আশ্বস্ত করতেই এ কথা বলেছেন জিওনি কর্তা।

চিনে বিক্রির পাশাপাশি জিওনি ভারতের বাজারে স্মার্ট ফোনের ব্যবসা শুরু করে ২০১৩ সালে। কয়েক বছরের মধ্যেই এ দেশে ভাল বাজার ধরে ফেলে। ২০১৭ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে ভারতে স্মার্ট ফোন বিক্রির নিরিখে জিওনির দখলে ছিল ৪.৬ শতাংশ মার্কেট শেয়ার, যা প্রথম সারির অন্যান্য ফোনগুলির বিক্রির তুলনায় ছিল উপরের দিকে।  ২০১৮ সালের গোড়ার দিক থেকে বাজার কিছুটা পড়তির দিকে হলেও আর্থিক দিক থেকে সমস্যায় পড়েনি। কিন্তু সেই সঙ্কটই ডেকে আনলেন সংস্থার কর্তা লিউ লিরং।