মেয়েকে মেডিক্যালে ভর্তি করতে গিয়ে ৫১ লাখ খোয়ালেন কলকাতার ব্যবসায়ী


খোদ নেপাল উপ-দূতাবাসে বসে ৫১ লাখ টাকা প্রতারণার শিকার হলেন কলকাতার এক ব্যবসায়ী। এমনটাই তিনি অভিযোগ জানিয়েছেন ফুলবাগান থানায়। ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের রেজিস্ট্রারও যুক্ত রয়েছেন এই প্রতারণার সঙ্গে।

ফুলবাগানের ব্যবসায়ী সুমিত চৌধুরির মেয়ে সহেলি। মেয়েকে নেপালের মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করার খোঁজ খবর নিতে গিয়েছিলেন আলিপুরে নেপালের উপদূতাবাসে। সুমিতবাবু তাঁর অভিযোগ পত্রে জানিয়েছেন, নেপাল কনসুলেটে কথা বলতে গেলে, সেখানে ক্ষাত্রি নামে এক কর্মীর সঙ্গে কথা বলতে বলা হয়।

সেই ক্ষাত্রি নামে কর্মী তাঁকে বলেন, নেপালের মেডিক্যাল কলেজের সমস্ত ভর্তি হয় ইন্টার গ্লোবাল এডুকেশন নামে একটি সংস্থার মাধ্যমে যাঁদের অফিস ডায়মন্ডহারবার রোডে। সেখানে রাজীব গুপ্ত নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ  করতে বলা হয়।

এ বছর জুন মাসে সুমিতবাবু রাজীব গুপ্তর সঙ্গে দেখা করলে তাঁরা মোট ৭৫ লাখ টাকা দাবি করেন ভর্তির জন্য। সুমিতবাবু বলেন, "রাজীব গুপ্ত আমার কাছে প্রথমেই দু'লাখ টাকা নগদ চায়, এজেন্সির ফি হিসাবে। আমি প্রথমে এক লাখ টাকা চেকে দিই এবং পরে ভর্তির পর আরও এক লাখ টাকা নগদে দেব বলে জানাই।"

সুমিতবাবু জানিয়েছেন, এর পর তিনি কয়েক দফায় মোট ৫০ লাখ টাকা দেন। তিনি বলেন,"ইতিমধ্যে আমাকে জানানো হয়, ওঁরা নেপালের বদলে নবি মুম্বইয়ের এমজিএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মেয়েকে ভর্তি করার ব্যবস্থা করে দেবে। রাজীবের কথা মতো ওই হাসপাতালের অ্যাকাউন্টে ১০ লাখ টাকা পাঠাই।"

ইতিমধ্যে ৩১ আগস্ট দেশের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ বলে ঘোষণা করা হয়। সুমিতবাবু মেয়ের ভর্তি নিয়ে বার বার রাজীবের কাছে গেলেও তাঁরা কোনও ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হয়। সেপ্টেম্বর মাসে সুমিতবাবু এমজিএম হাসপাতালের রেডিস্ট্রার রাজেশ গয়ালের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেখানে জানতে পারেন তাঁর মেয়ের ভর্তির ব্যাপারে কোনও কিছুই হয়নি। তিনি বুঝতে পারেন প্রতারিত হয়েছেন।

সুমিতবাবুর অভিযোগ, তিনি ফুলবাগান থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে সেখানে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করা হয়। তিনি তখন বাধ্য হয়ে শিয়ালদহ আদালতে যান। আদালত ফুলবাগান থানাকে তদন্ত করতে নির্দেশ দেয়। সুমিতবাবু বলেন, "আদালতের নির্দেশ নিয়ে যাওয়ার পরও তদন্ত শুরু করার বদলে আমাকে বলা হয় আমার টাকার উৎস জানাতে। পুলিশ আগাগোড়া অসহযোগিতা করছে।"

পুলিশ যদিও অসহযোগিতার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।ফুলবাগান থানার এক আধিকারিক বলেন, "আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পরই এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে।আমরা তদন্তও শুরু করেছি।"