প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্রকারী লস্কর জঙ্গির সাজা ঘোষণা শনিবার


বনগাঁ : সাজা ঘোষণা হল না লস্কর ই-তইবার জঙ্গি আবদুল নইম ওরফে শেখ সমীরের। আজ সমীরকে বনগাঁ আদালতে তোলা হয়। বিচারক বিনয়কুমার পাঠক সমীরকে জিজ্ঞাসা করেন, কী ধরনের সাজা তিনি চান। সমীর স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেনি। তারপরই বিচারক শনিবার সাজা ঘোষণার কথা ঘোষণা করেন।

শেখ সমীর পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন লস্কর ই-তইবার সক্রিয় সদস্য। ২০০৭ সালের এপ্রিল মাসে পেট্রাপোল সীমান্তে একটি ফাঁকা বাড়ি থেকে জঙ্গি সন্দেহে চার জনকে আটক করে BSF। পরে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ধৃতদের নাম মহম্মদ নইম ওরফে শেখ সমীর, মহম্মদ ইউনিস, শেখ আবদুল্লা ও মুজ়ফ্ফর আহমেদ রাঠোর। তারপর CID তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা, অস্ত্র মজুতসহ কয়েকটি ধারায় মামলা রুজু করে। গত বছর ওই মামলায় বিচারক মহম্মদ ইউনিস, শেখ আবদুল্লা ও মুজ়ফ্ফর আহমেদ রাঠোরকে ফাঁসির নির্দেশ দিয়েছিলেন। 

মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গবাদের বাসিন্দা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার সমীর ২০০৫ সালে সৌদি আরবে গেছিল। সেখানে লস্করের এক এজেন্ট আমজাদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তারপর পাকিস্তানে যায় সমীর। সেখান থেকেই জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। কাশ্মীর সীমান্তে কড়া নিরাপত্তার কারণে ভারতে ঢুকতে পারছিল না সে। তাই, সমীর তার সঙ্গীদের নিয়ে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি থেকে বাংলাদেশের ঢাকায় যায়। সেখানে মতিঝিল এলাকার একটি হোটেলে আস্তানা গাড়ে। তারপর বেনাপোল থেকে সীমান্ত পেরিয়ে বনগাঁর পেট্রাপোলের একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেখান থেকে সমীর ও তার সঙ্গীদের BSF-র সহযোগিতায় পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ২০১২ সালে বনগাঁ মহকুমা আদালতে মামলা শুরু হয়। মামলা চলাকালীন ২০১৪ সালে মুম্বইয়ের একটি মামলার তদন্তে সমীরকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পথে ছত্তিশগড়ে চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যায় সমীর। ২০১৭ সালে তাকে দিল্লির পাটিয়ালা থেকে NIA গ্রেপ্তার করে। সেখানে তার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগও রয়েছে। 

পরে তিহার জেলে ঠাঁই হয় তার। সেখান থেকে সমীরকে বনগাঁ আদালতে আনা হয়। মঙ্গলবার বিচারক বিনয়কুমার পাঠক সমীরকে দোষীসাব্যস্ত করেন। আজ সাজা ঘোষণার কথা ছিল। সকালে দমদম সেন্ট্রাল জেল থেকে সমীরকে বনগাঁ আদালতে আনা হয়েছিল। মামলা চলাকালীন আদালত চত্বর নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল। বিচারক সমীরকে জিজ্ঞাসা করেন, সে কী ধরনের সাজা চায়। কিন্তু, সমীর নিজেকে নির্দোষ বলে জানায়। বিচারক তখন জানান, দোষী না নির্দোষ সে পর্ব পেরিয়ে গেছে। তখন সমীর জানায়, আদালত আগে থেকেই ফাঁসি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে। সে হাইকোর্টে আবেদন করেছে। তারপর অবশ্য বিচারক বলেন, আগামী শনিবার সাজা ঘোষণা করবেন। মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী সমীর দাস বলেন, "আজ মামলার সাজা ঘোষণার কথা ছিল। বিচারক, আসামি মহম্মদ নইম ওরফে শেখ সমীরকে কী সাজা চান তা জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সমীর নানা কথার জালে আদালতকে অন্য দিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। আমরা সমীরের ফাঁসির সাজার আবেদন করেছি। গুরুত্বপূর্ণ এই মামলায় বিচারক শনিবার সাজা ঘোষণা করবেন।"