ট্রেনটা আসছে! ছমাসের শিশুকন্যাকে কোলে নিয়ে ঝাঁপ দিল বাবা…


বারাকপুর: ট্রেন লাইন পার হতে গিয়ে আপ গ্যলোপিন রানাঘাট ফাস্ট প্যাসেঞ্জার ট্রেনের ধাক্কায় মর্মান্তিক মৃত্যু হল বাবা ও কন্যা সন্তানের৷ মৃত বাবার নাম বিশ্বরূপ দে (৪২) এবং তার কোলে থাকা কন্যা সন্তানের নাম ধ্রিতিষ্মিতা দে।

মাত্র ৬ মাসের ধ্রিতিষ্মিতা দুর্ঘটনার সময় তার বাবা বিশ্বরূপ বাবুর কোলেই ছিল৷ ট্রেনের ধাক্কায় বিশ্বরূপ দে ট্রেন লাইনে কাটা পড়েন এবং তার হাত থেকে ছোট্ট ফুটফুটে শিশুটি ছিটকে আটকে যায় ওই রানাঘাট গ্যালোপিন ফাস্ট প্যাসেঞ্জার ট্রেনেরই একটি যন্ত্রাংশের মধ্যে৷

সোমবার সকাল ১১:৫০ মিনিটে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে শিয়ালদা মেন শাখার খড়দা রেল স্টেশনের আপ ৩ নম্বর লাইনে। ওই গ্যালপিন ট্রেনটি যখন নদিয়া জেলার রানাঘাট স্টেশনে পৌঁছায়, তখন ওই ট্রেনের গার্ডের নজরে আসে ট্রেনের যন্ত্রাংশে আটকে রয়েছে মৃত ৬ মাসের শিশু সন্তান৷ এরপর ওই মৃত শিশুকে রেলকর্মীরা উদ্ধার করে পরবর্তী ডাউন ট্রেনে করে নৈহাটিতে রেল পুলিশের হেফাজতে দেয়৷

স্থানীয় সূত্রের খবর, মৃত বিশ্বরূপ বাবু খড়দহ থানা এলাকার রহড়া মন্দির বাজার মিশনপাড়া অঞ্চলের বাসিন্দা৷ অসতর্কতার কারনেই ওই শিশুকন্যা ও তার বাবার মৃত্যু হয়েছে বলে খড়দহ রেল স্টেশনের নিত্যযাত্রীদের অনুমান৷ মৃত বিশ্বরূপ বাবু এক বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন এবং বাড়িতে গৃহ শিক্ষকতা করতেন বলে স্থানীয়রা জনিয়েছেন।

বিশ্বরূপ বাবুর স্ত্রী খড়দার পাতুলিয়া অঞ্চলের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল শিক্ষিকা বলে জানা গিয়েছে৷ রেল দুর্ঘটনায় বাবা ও মেয়ের মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর মন্দিরবাজার রহড়া মিশনপাড়াতে পৌঁছাতেই ওই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

মৃতের পরিবার সূত্রের খবর, সোমবার সকালে নিজের ৬ মাসের কন্যা সন্তানকে কোলে নিয়ে বিশ্বরূপ বাবু তার বোনের বাড়ি খড়দা রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ঘুরতে যাচ্ছিলেন। সেই সময় খড়দা রেল স্টেশন সংলগ্ন রেলগেট পার হতে গিয়ে অসতর্কতার কারনে খড়দা রেল স্টেশনের আপ ৩ নম্বর লাইনে রানাঘাট গ্যালোপিন ট্রেনের ধাক্কায় এই মর্মান্তিক পরিণতি হয়।

তবে প্রতিবেশীদের একাংশের ধারনা, কন্যা সন্তানকে নিয়ে মানসিক অবসাদে আত্মহত্যা করেছে ওই ব্যক্তি। কারন, তার স্ত্রী সরকারি চাকরি করলেও তার উপার্জন কম ছিল। পারিবারিক কোনও সমস্যার কারনেও এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে মনে করছেন প্রতিবেশীরা। যদিও মৃতের পরিবারসূত্রের বিশ্বরূপ বাবুর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি। রেলপুলিশ এই দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।