‘২০টি মুসলিম অধ্যুষিত দেশে নিষিদ্ধ তিন তালাক, ধর্ম নিরপেক্ষ ভারতে কেন নয়?’


নয়াদিল্লি: মুলতুবির পর সংসদের অধিবেশন শুরু হতেই তিন তালাক বিল নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক৷ কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি ও এআইএমআইএমের সাংসদরা তিন তালাক বিলটিকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি জানান৷ লোকসভা বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের মন্তব্য, এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিল৷ তিন তালাক বিল আরও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন৷ এর সঙ্গে সাংবিধানিক বিষয়টিও জড়িত৷ তাই বিলটিকে জয়েন্ট সিলেক্ট কমিটিকে পাঠানো হোক৷ একই দাবি তোলেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যয়৷

বিরোধীদের তখন জবাব দিতে ওঠেন আইনমন্ত্রী রবি শঙ্কর প্রসাদ৷ জানান, মুসলিম মহিলাদের স্বার্থ সুরক্ষায় বিলটি আনে সরকার৷ এই বিলে এমন কোনও বিধান রাখা নেই যা তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত হানবে৷ মুসলিম মহিলারা যাতে ন্যায় ও সমানাধিকার পায় তা সুনিশ্চিত করতে এই বিল৷ সরকার অর্ডিন্যান্স আনতে বাধ্য হয়েছে কারণ এখনও তাৎক্ষণিক তিন তালাক দেওয়ার রীতি বন্ধ হয়নি৷ পরিসংখ্যান দিয়ে সরকারের তরফে জানানো হয়. সুপ্রিম কোটের রায়ের পরেও বিভিন্ন মিডিয়া মারফত ৪৩০টি তিন তালাকের ঘটনা ঘটেছে৷ এর মধ্যে ২০১টি হয়ে সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ের পর৷

আইনমন্ত্রী যখন বক্তব্য রাখছিলেন তখন অনেক বিরোধী দলের নেতারা প্রশ্ন তোলেন, তিন তালাক নিয়ে মুসলিম মহিলাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় মরিয়া সরকার৷ অথচ এই সদিচ্ছা সবরীমালা মন্দিরের উদ্দেশ্যে যাওয়া মহিলাদের প্রতি কেন দেখা যাচ্ছে না? সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর কেন সবরীমালা মন্দিরে প্রবেশের অধিকার থেকে মহিলাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে? সেসব প্রশ্নকে কানে না নিয়ে আইনমন্ত্রী জানান, ২০টি মুসলিম অধ্যুষিত দেশে তিন তালাক বন্ধ৷ তাহলে ধর্মনিরপেক্ষ দেশ ভারতে কেন এই প্রথা বন্ধ করা হবে না৷ বিরোধী দলগুলিকে রাজনীতি না করার আবেদন জানান৷

২৭ ডিসেম্বর তিন তালাক বিল নিয়ে বিতর্কে অংশ নিতে রাজি হয় কংগ্রেস৷ সেই মতো বিজেপি ও কংগ্রেস দুই দলই হুইপ জারি করে সব সাংসদকে লোকসভায় হাজির হতে বলে৷ আগামী বছর লোকসভা ভোট৷ তার আগে এটাই শেষ অধিবেশন৷ শীতকালীন অধিবেশনে তিন তালাক বিল পাশ করাতে মরিয়া সরকার৷