মেট্রোয় হঠাৎ বিপদে পড়লে কী কী করা উচিত?


হঠাৎ এসি রেকে ধোঁয়া। সহযাত্রীদের চিৎকার, আর তা শুনেই আতঙ্ক। ধোঁয়া নিয়েই চলতে শুরু করল মেট্রো। এদিন  যাঁরা পাতালরেলে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন, তাঁরাই জানেন পরিস্থিতি কী ছিল। মাত্র কয়েকদিন আগে লাইনে ফাটল ধরে। অফিস টাইমে চাঁদনি চক স্টেশনে মেট্রো বন্ধ ছিল। আর এদিন ময়দানে মেট্রোতে আগুন আতঙ্ক। পথে বিপদ কখনও বলে আসে না। দমকলমন্ত্রী বলছেন অ্যালার্ম সিস্টেম কাজ করছিল না। এদিকে মেট্রো কর্তৃপক্ষ বলছে ঘোষণা করা হয়েছিল। বাদানুবাদ চলছে। জল অনেকদূর গড়াবে। ঘটনায় আহত যাত্রীদের পিজি ও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। তবে জেনে নেওয়া ভাল, এরকম পরিস্থিতিতে নিত্যযাত্রীরা কী করবেন, আর কী করবেন না।

প্রত্যেকদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ কাজের তাগিদে মেট্রোতে যাতায়াত করতে বাধ্য হন। কিন্তু একটা দুর্ঘটনা মানুষকে কিছুক্ষণের জন্য হলেও স্তব্ধ করে দেয়। পাতালপথে এসি বা নন এসি মেট্রো হঠাৎ দাঁড়িয়ে গেলে আতঙ্ক হওয়ারই কথা। এদিন তিন ঘণ্টা মেট্রো চলাচল বন্ধ ছিল। পৌনে একঘণ্টা এসি রেকে আটকে ছিল যাত্রীরা। উদ্ধার হওয়ার পরেও আতঙ্ক থেকে বেরোতে পারেনি তারা। ভবিষ্যতে ফের এরকম দুর্ঘটনা ঘটলে কী করবেন! মেট্রো কর্তৃপক্ষ বা উদ্ধারকারী দল খবর পাওয়া পর্যন্ত আপনাকেই কিছু তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। 


১. প্রথমে মাথা ঠান্ডা রাখুন। ওই পরিস্থিতিতে যা করা কঠিন। কিন্তু করতে পারলে আপনি সব বিপদ থেকে বেরোতে পারবেন।

২. উত্তেজনায় কান দেবেন না। নিজে বুঝে সিদ্ধান্ত নিয়ে তবেই এগোন। সহযাত্রীদের কেউ মানসিকভাবে দুর্বল। কেউ চিৎকার করে। কেউ রাস্তা বাতলে দেয়। হয়তো সেখানেই বিপদ লুকিয়ে আছে। এরকম পরিস্থিতিতে একটু চটজলদি কোনও সিদ্ধান্ত না নিয়ে ধীরেসুস্থে ভাবুন। ঠিক রাস্তা বেরোবে।

৩. মেট্রোর ট্র্যাক সম্পর্কে মাথায় রাখুন। এরকম বিপদের সময় যদি সবাই নামছে ভেবে আপনাকেও নামতে হয়, তবে কিছু বিষয় খেয়াল রাখুন। লাইনে সাবধানে হাঁটুন। তিন নম্বর ট্র্যাকে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ থাকলেও এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।

৪. এসি মেট্রোতে সব কাঁচ বন্ধ। হঠাৎ মাঝপথে দাঁড়িয়ে পড়লে দমবন্ধ অবস্থা তৈরি হয়। এদিন মেট্রোতে কাঁচ ভেঙে বেরিয়েছে যাত্রীরা। আপৎকালীন অবস্থায় উদ্ধার পাওয়াটাই আসল ব্যাপার। কিন্তু ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নেওয়াই ভাল।

৫. মেট্রোতে আটকে পড়লে হেল্পলাইন নম্বরের যোগাযোগ করার চেষ্টা করতে থাকুন। ভাল করে মেট্রোর ঘোষণা শোনার চেষ্টা করুন। কারণ, মেট্রোর কোনও গণ্ডগোল ঠিক করা সাধারণ যাত্রীদের হাতে নেই। বাস নয়, যে নেমে ড্রাইভারের উপরে রাগ দেখাবেন। ট্রেনের মতো লাইনে বিক্ষোভ দেখানোর জায়গা নেই। তাই এটি এমন এক অবস্থা, যেখান থেকে বেঁচে ফেরাই বিভীষিকা। তাই মাথা ঠান্ডা রেখে হেল্পলাইন, দমকল বা কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করুন। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী বা মেট্রো কর্তৃপক্ষের সহায়তা না পেলে কোনও সমাধান হবে না।

বিপদ কখনও বলে আসে না। প্রত্যেকদিন রাস্তায় একাধিক বিপদ অপেক্ষা করে আছে। কোথাও ব্রিজ ভাঙছে, আবার কোথাও ট্রেন দুর্ঘটনা। সতর্ক থাকতে হবে নিত্যযাত্রীদের। দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে উত্তেজিত মানুষের ভিড়ে না মিশে একটু তফাতে থাকুন। মাথা ঠান্ডা রাখুন। নিজের মতো উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগান। আপনার উত্তেজনা যেন আর পাঁচটা লোকের বিপদ ডেকে না আনে। সব সময় মাথায় রাখুন, আপনার পরিবারের কাছে জীবন অনেকটা দামী।