ইউপিএ জমানায় ৯ হাজার মোবাইলে নজরদারি চালিয়েছে কেন্দ্র !


১০টি গোয়েন্দা সংস্থাকে ব্যক্তিগত কম্পিউটারে আড়ি পাতার অনুমতি দেওয়ায় কেন্দ্রকে কার্যত তুলোধোনা করছে বিরোধীরা৷ মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনায় মুখর কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা৷ তবে এই প্রথম নয়, আশ্চর্যের বিষয় হল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের আমলেও একই ঘটনা ঘটেছিল৷ পূর্বতন মনমোহন সিং সরকারও সাধারণ মানুষের মোবাইল ও ই-মেলে আড়ি পাতার অনুমতি দিয়েছিল গোয়েন্দা সংস্থাগুলিকে৷ সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে ২০১৩-র একটি আরটিআই রিপোর্ট৷ যেখানে বলা হয়েছে, মনমোহন সিং সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে ওই বছর প্রতি মাসে প্রায় ন'হাজার ফোন ও পাঁচশো ই-মেলে নজরদারি চালিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলি৷

সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, ২০১৩-র ১৩ জুলাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে আরটিআই ফাইল করেছিলেন দিল্লির বাসিন্দা প্রসেনজিৎ মণ্ডল৷ একমাসের মধ্যে তাঁর সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক৷ উত্তরে বলা হয়, কেন্দ্রের অনুমতিতে ওই বছর সাড়ে সাত হাজার থেকে ন'হাজার মোবাইলে আড়ি পেতেছে গোয়েন্দারা৷ পাশাপাশি, নজরদারি চালানো হয়েছে তিনশো থেকে পাঁচশোটি ই-মেলে৷ কোন কোন গোয়েন্দা সংস্থা এই নজরদারি চালিয়েছিল, তাও বলা হয়েছিল আরটিআই-এর উত্তরে৷ তাতে নাম ছিল, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো, নারকোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো, ইডি, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডিরেক্ট ট্যাক্স, ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স, সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন, ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেটিং এজেন্সি, র' ও তৎকালীন দিল্লির পুলিশ কমিশনারের৷

বৃহস্পতিবারই কেন্দ্র নোটিস দিয়ে জানায়, কেন্দ্র বা রাজ্যের অধীনস্থ ১০টি গোয়েন্দা সংস্থা জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে যেকোনও কম্পিউটারের নজরদারি চালাতে পারবে। এরপরই দেশজুড়ে প্রতিবাদে নামে বিরোধীরা। শুক্রবার কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি, সমাজবাদী পার্টির নেতা রামগোপাল যাদব কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হন। উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদও৷ বিরোধীদের সমালোচনার জবাব দেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তিনি বলেন, "এটা নতুন নোটিস নয়। সংবিধান মেনেই গোয়েন্দা সংস্থাকে এরকম অধিকার দিয়েছে কেন্দ্র। তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৯ নম্বর ধারায় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে এই ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। আইন মেনেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।"