এফবিআই ও ইন্টারপোলের সাথে হাত মিলিয়ে বিশাল কল সেন্টার প্রতারণাচক্রকে গ্রেফতার করল গুরুগ্রামের পুলিশ


চার মাস আগে মাইক্রোসফটের একটি দল গুরুগ্রামের পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেছিল। সেখানে জানানো হয়েছিল একটি প্রতারণা চক্র কোম্পানির কয়েকশো কোটি টাকা ক্ষতি করছে।

এই বিষয়ে সিঙ্গাপুর ও আয়ারল্যান্ডের পুলিশ গুরুগ্রামের পুলিশ কমিশনারকে একটি বিস্তারিত প্রেজেন্টেশান দিয়েছিলেন। গুরুগ্রামের পুলিশ সদর দপ্তরে এই মিটিং এ উপস্থিত ছিলের গুরুগ্রাম পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগের সব অফিসার। গুরুগ্রামের এক কল সেন্টার থেকে কীভাবে মাইক্রোসফটের নাম ভাঁঙ্গিয়ে একটি প্রতারণা চক্র কীভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তা জানানো হয়েছিল এই মিটিং এ। গুরুগ্রামের উদ্যোগ বিহার ও সেক্টার ১৮ ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়াতে বসে এই কাজ করছিল প্রতারক চক্রটি।

এরপরে তদন্তে নামে গুরুগ্রাম পুলিশ। এই ধরনের কেসে যে সব অফিসারদের অভিজ্ঞতা রয়েছে বাইরে থেকে সেই ধরনের অফিসারদের সাহায্য নিয়েছে গুরুগ্রামের পুলিশ।

এই তদন্তে গুরুগ্রাম পুলিশের সাথে যুক্ত ছিল নয়ডা পুলিশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই আর কানাডার রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ। এই তদন্তের সময় গুরুগ্রাম পুলিশের অফিসাররা সব সময় মাইক্রোসফট কর্মীদের সাথে যোগাযোগ রেখেছিলেন। প্রাথমিক তদন্দের পরে আটটি আলাদা দল গঠন করা হয়েছিল। এই দলগুলিতে ৪০ জন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ আর ৫০ জন পুলিশ কর্মী ছিলেন। ২৭ নভেম্বর এই আটটি দল আটটি আলাদা জায়গায় হানা দিয়ে ১৫ জনকে হাতেনাতে ধরে গ্রেপ্তার করেন। এর সাথেই মাইক্রোসফটের তরফ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

এই অভিযোগ অনুসারে অভিযুক্তরা দিল্লির এক দালালের কাছ থেকে বিদেশী নাগরিকদের ব্যাক্তিগত তথ্য কিনেছে।

"সিন্টেম হ্যাক করে একটি পপ আপ উইন্ডোতে 'আপনার কম্পিউটারে ভাইরা রয়েছে' বলে নোটিফিকেশান পাঠানো হত। সেখানে একটি নম্বর দেওয়া থাকত। গ্রাহক সেই নম্বরে ফোন করলে এই কল সেন্টার থেকে মাইক্রোসফট কল সেন্টারের নাটক করা হত। এর পরে গ্রাহকের কম্পিউটার ভাইরাস মুক্ত করার জন্য টাকা চাওয়া হত। এর পরে গ্রাহককে একটি সফটওয়্যার ইনস্টল করতে বলা হত। এই সফটওয়্যার ইনস্টলের পরে গ্রাহকের কম্পিউটারের সম্পউর্ণ দখল নিয়ে নিতের প্রতারকরা। একবার সার্ভিসের জন্য ১০০ ডলার থেকে ১০০০ ডলার পর্যন্ত নেওয়া হত।" বলে জানিয়েছেন গুরুগ্রামের পুলিশ প্রধান। তিনি জানিয়েছেন হাওয়লার মাধ্যমে এই টাকা দেশে পৌঁছাত। সারা বিশ্বের নাশকতার কাজে ব্যবহার হত এই টাকা।

কল সেন্টারগুলি থেকে পাওয়া সব কম্পিউটার ও গ্যাজেট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যদিও কিছু অভিযুক্ত ইতিমধ্যেই জামিনে মুক্ত হয়েছেন। জামিনে ছাড়া পাওয়া বেক অভিযুক্ত জানিয়েছেন, "মাইক্রোসফটের কথা শুনে আমাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কল সেন্টার চালানোর সব আইনি নথি আমাদের কাছে রয়েছে। আমরা যদি বেআইনি কাজ করি তবে আমাদের কল সেন্টার বাজেয়াপ্ত করুন পুলিশ।"