৬টি জায়গায় ইডির হানা মিলছে নগদ কোটি কোটি টাকা


আন্তর্জাতিক হাওলার মাধ্যমে টাকা পাচার চক্রের খোঁজ মিলল কলকাতায়। শহরের ছ'টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বেআইনি নগদ বাজেয়াপ্ত করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে হানা দেওয়া হয় বড়বাজার, পার্ক স্ট্রিট সহ শহরের বেশ কয়েকটি প্রান্তের অফিসে। কলকাতা থেকেই যে হাওলা কারবার নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, তা নিয়ে গোয়েন্দারা কয়েকদিন আগেই রিপোর্ট পাঠান। একই খবর ইডির কাছেও আসে। তার ভিত্তিতেই তল্লাশি বলে জানা গিয়েছে।

কোন জায়গা থেকে এই হাওলা কারবার চলছে এবং কারা এর পাণ্ডা, সে সম্পর্কে খুঁটিনাটি তথ্য জোগাড় করেন ইডি আধিকারিকরা। জানা যায়, এই টাকার বেশিরভাগটাই এ দেশে এসে সংগ্রহ করছে বাংলাদেশি নাগরিকরা। পাশাপাশি দিল্লি, মুম্বই ও দুবাইতে হাওলা করে টাকা পাঠানো হচ্ছে। কাগুজে কোম্পানি খুলে বা ভুয়ো লেনদেন দেখিয়ে দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় তা পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই টাকার পুরোটাই আয়করবিহীন। জানা গিয়েছে, বড়বাজারের কলাকার স্ট্রিট, মধ্য কলকাতার মার্কুইস স্ট্রিট, পার্ক লেন, সদর স্ট্রিট হচ্ছে এই কারবারের মূল জায়গা। মানি চেঞ্জারের ব্যবসা খুলে আড়ালে হাওলার কারবার চালানো হচ্ছে। কীভাবে কোথায় কোথায় অপারেশন চালানো হবে, তার ব্লু প্রিন্ট তৈরি করা হয়। এরপরই বিকেলে অফিসাররা ছ'টি টিমে ভাগ হয়ে এই জায়গাগুলিতে তল্লাশি শুরু করেন। জানা গিয়েছে, বড়বাজারের কলাকার স্ট্রিটের একটি অফিস থেকেই ৩৩ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। মিলেছে ডায়েরি ও কিছু সাঙ্কেতিক কোড। অন্য জায়গাগুলি থেকেও বিপুল পরিমাণ নগদ মিলেছে। মার্কুইস স্ট্রিট ও সদর স্ট্রিটের একটি অফিস থেকে মিলেছে প্রচুর পরিমাণ বাংলাদেশি টাকা ও মুদ্রা। সবমিলিয়ে নগদের পরিমাণ ইতিমধ্যেই প্রায় ৬ কোটি ছুঁয়েছে। গভীর রাত পর্যন্ত এই তল্লাশি অভিযান চলে। টাকার পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে খবর। বেশ কয়েকজনকে আটক করে জেরা করা হচ্ছে। এর বাইরে লেনদেনের বেশকিছু কাগজপত্র মিলেছে।

প্রাথমিকভাবে ইডি কর্তারা জানতে পারছেন, বাংলাদেশ, দুবাই, দিল্লি ও মুম্বইয়ের হাওলা কারবারিদের সঙ্গে এ রাজ্যের হাওলায় জড়িত ব্যবসায়ীদের যোগাযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের একশ্রেণীর ব্যবসায়ী শহরে এলে তাঁরা খুব কম নগদ নিয়ে আসেন। এ দেশে আসার পর সীমান্তের ওপারের হাওলা ব্যবসায়ীদের তরফে 'নির্দিষ্ট' করে দেওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নেন তাঁরা। একইভাবে এ রাজ্য থেকে বাংলাদেশে যাওয়া কিছু ব্যবসায়ী সেদেশের হাওলার কারবারিদের থেকে টাকা নিতেন। রেডিমেড গার্মেন্টেসের ব্যবসার আড়ালে এই টাকা হাওলা করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এমনকী বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার টাকাও এভাবে দিল্লি, মুম্বই সহ অন্যান্য জায়গায় পাচার হয়েছে।