'অসুস্থ' পর্ষদ সভাপতির মাথায় ছাতা ধরে দাঁড়িয়ে শিক্ষক !


আলিপুরদুয়ার : তিনি নাকি অসুস্থ ! প্রাথমিক স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বলে এসেছেন। রোদ্দুরে বেশিক্ষণ দাঁড়াতে পারবেন না। তাই, এক শিক্ষক তাঁর মাথায় ছাতা ধরে ছিলেন। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। নিন্দুকদের তো আর কাজ নেই ! শুরু করেছে সমালোচনা। কেউ বলছে, ঔদ্ধত্য। কেউ আবার বলছে, অসুস্থ নাকি ছাই ! দিব্যি তো হাঁটা-চলা করছিল। আর ছাত্রছাত্রীদের কাঠফাটা রোদে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল। এসব কী ?

মানিক ভট্টাচার্য। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সভাপতি। এহেন মানিকবাবু গতকাল ছিলেন আলিপুরদুয়ারে। সেখানে জেলার ১২টি সার্কেলের সমস্ত স্কুল নিয়ে আয়োজিত হয়েছে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। আজ এই প্রতিযোগিতার শেষ দিন। গতকাল উদ্বোধন হয়। উদ্বোধনের সময় ছিলেন মানিকবাবু। ছাত্রছাত্রীদের অভিবাদনও গ্রহণ করলেন। এই পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু, বিতর্ক শুরু হয়েছে অন্য কারণে। কারণ, তাঁর মাথায় ছাতা (গার্ডেন ছাতা) ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন এক শিক্ষক। আর ছাত্রছাত্রীরা রোদে দাঁড়িয়ে তাঁকে অভিবাদন জানাচ্ছিলেন। হাত তুলে অভিবাদন গ্রহণও করছিলেন তিনি। 

পর্ষদ সভাপতির মাথায় ছাতা ধরে যিনি দাঁড়িয়েছিলেন তাঁর নাম অভিজিৎ কুণ্ডু। তিনি আলিপুরদুয়ার টাউন সার্কেল তপসিখাতা প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। বয়স ৩০-৩২। তাঁকে ইনাডু বাংলার প্রতিনিধি প্রশ্ন করেন, মানিকবাবুর মাথায় ছাতা ধরে কেন দাঁড়িয়েছিলেন ? আমতা আমতা করে অভিজিৎবাবু বললেন, "উনি খুব অসুস্থ। তাই, এক আধিকারিক আমাকে ছাতা ধরার নির্দেশ দিয়েছেন।" যা শুনে নিন্দুকেরা হাসছেন। বলছেন, জমিদাররাজ ফিরে এল নাকি ? সেই তো আগেকার দিনে জমিদারদের মাথায় পেয়ালারা ছাতা ধরে দাঁড়াত। অনেকটা সেই দৃশ্যই দেখা যাচ্ছে। 

বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী। তবে, নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সংসদেরই এক কর্তা বলেন, "উনি সত্যিই অসুস্থ ছিলেন।" গোটা ঘটনা নিয়ে মানিকবাবুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। 

ছাতা বিতর্কে ধামাচাপা পড়ে গেছে শিক্ষকদের আর এক 'কীর্তি'। জুতো পরেই তাঁরা সার্কেলের পতাকা উত্তোলন করেছেন। এটা নিয়মবিরুদ্ধ। যা দেখে অনেকে অবশ্য বলছেন, জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সময় ভাগ্যিস জুতোটা খুলেছিলেন ওঁরা !