কৃষি ঋণ মকুবের নামে রাহুলের চালাকি? কাগজ খতিয়ে দেখার হুঁশিয়ারি মমতার


মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ় ও রাজস্থানে কৃষি ঋণ মকুবের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। ক্ষমতায় আসার পর সেই প্রতিশ্রুতি রেখেছেনও। যদিও ঋণ মকুবের ঘোষণায় উঠেছে নানা প্রশ্ন। ২০১৯ সালের আগে কৃষক সমস্যাকেই ইস্যু করে তুলেছে কংগ্রেস। পিছিয়ে নেই বামেরাও। দিল্লি তো তারা মিছিল করেছে, বাংলাতেও সিঙ্গুর থেকে কলকাতা কৃষক জাঠা করেছে বামপন্থী সংগঠনগুলি। আর সে কারণেই এবার কৃষক ইস্যুতে কংগ্রেস-বিজেপিকে একযোগে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঋণ মকুবের নামে চালাকি হচ্ছে কিনা তা বুঝতে কাগজপত্র খতিয়ে দেখার কথাও বলেন তৃণমূল নেত্রী।       

গোটা দেশের মতোই এ রাজ্যের অর্থনীতিও কৃষিনির্ভর। জমি আন্দোলন করেই ক্ষমতায় এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বছর ঘুরলেই লোকসভা ভোট। বাংলার প্রান্তিক-গরিব কৃষকের মনের কথা তাই এখন মুখ্যমন্ত্রীরও মুখে কৃষি ঋণ মকুবে আসলে লাভ হয় সম্পন্ন চাষির। উল্টে, গরিব চাষির ঋণ পাওয়ার পথ বন্ধ হয়। অর্থনীতিবিদদের বড় অংশ এই যুক্তিতে সরব। সরব তাই মুখ্যমন্ত্রীও। তাঁর কথায়,''কৃষি ঋণ মকুবে লাভ নেই''। এমনকি, সবটাই কাগজে-কলমে হচ্ছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখার হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন। যদিও বিরোধীরা এ রাজ্যেও কৃষিঋণ মকুব নিয়ে তাঁকে চাপে ফেলার কৌশল নিচ্ছে। বিজেপিশাসিত রাজ্যে কৃষক আত্মহত্যার প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, বাংলায় কৃষকরা ভাল আছে। সুখে আছে। সরকার তাদের পাশে আছে।

কৃষি ও কৃষক। ২০১৯ সালের আগে মোদীকে কোণঠাসা করতে এটাই রাহুলের হাতিয়ার। বাংলাতেও সেই কৌশল ব্যবহার করতে পারেন রাহুল গান্ধী। কারণ, সদ্য দিল্লিতে গিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র জানিয়ে এসেছেন, রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে জোট করা উচিত নয়। এমনকি ১৯ ফেব্রুয়ারি তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশে সনিয়া গান্ধী যাতে উপস্থিত না হন, সেই আর্জিও করেছেন সোমেনবাবুরা। অন্যদিকে মমতাও স্পষ্ট করেছেন, দিল্লিতে সমঝোতা হলেও রাজ্যে তৃণমূল একাই লড়বে। বলে রাখি, পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের পর চন্দ্রশেখর রাওকে শুভেচ্ছা জানালেও কংগ্রেস নিয়ে কোনও কথা শোনা যায়নি মমতার মুখে। প্রসঙ্গত, কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে আগ্রহী বামেরা। তারা কৃষি ও কৃষককে হাতিয়ার করেই ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া। ফলে বাংলায় মহাজোট একপ্রকার হচ্ছে না বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। ইতিমধ্যে আবার অবিজেপি-অকংগ্রেসি জোটের বার্তা নিয়ে নবান্ন ঘুরে গিয়েছেন কেসিআর। ফলে বিরোধী জোট নিয়ে এখনও ধন্দ রয়েছে বলে মত অনেকের।