খুন ও ষড়যন্ত্রের পর্যাপ্ত প্রমাণ নেই, সোহরাবুদ্দিন হত্যা মামলায় বেকসুর খালাস ২২ অভিযুক্ত


২০০৫ সালে সোহরাবুদ্দিন শেখ এবং তার সহযোগী তুলসীরাম প্রজাপতির এনকাউন্টারে মৃত্যুর ঘটনায় ২২ অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করল মুম্বই-এর আদালত। আদালত জানিয়েছে, সাক্ষীদের বয়ান এবং সিবিআইয়ের  পেশ করা তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে এই ঘটনাকে 'ভুয়ো এনকাউন্টার' বলা যাচ্ছে না। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের অধিকাংশই  ছিলেন গুজরাত এবং রাজস্থানের পুলিশ অফিসার। যে ৩৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ছিলেন গুজরাত বিজেপির তৎকালীন নেতা এবং বিজেপির বর্তমান জাতীয় সভাপতি অমিত শাহ-ও।

২০০৫-এর নভেম্বরে গুজরাত পুলিশের এনকাউন্টারে মারা গিয়েছিল সোহরাবুদ্দিন শেখ। গুজরাত পুলিশের দাবি ছিল, সোহরাবুদ্দিনের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবার যোগাযোগ ছিল এবং সে লিপ্ত ছিল গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হত্যার করার একটি ষড়যন্ত্রের সঙ্গে ।

যদিও সিবিআই তদন্তে সামনে আসে অন্য তথ্য। আদালতে পেশ করা বক্তব্যে সিবিআই জানিয়েছিল, ''হায়দরাবাদ থেকে মহারাষ্ট্রের সাংলি যাওয়ার পথে সোহরাবুদ্দিন ও তার স্ত্রী কওসর বাঈকে অপহরণ করে গুজরাত পুলিশ। চার দিন পর আমদাবাদে ভুয়ো এনকাউন্টারে সোহরাবুদ্দিনকে হত্যা করে গুজরাত পুলিশ। আরও দু'দিন পর নিখোঁজ কওসরকে ধর্ষণের পর খুন করা হয় গুজরাতের বনসকন্থা জেলায়। পরের বছর গুজরাত-রাজস্থান বর্ডারে গুলি করে খুন করা হয় সোহরাবুদ্দিনের সহযোগী তুলসীরাম প্রজাপতিকে। ''

যদিও গুজরাত পুলিশের দাবি ছিল, আদালতে শুনানির পর পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থাতেই পালানোর চেষ্টা করছিল তুলসীরাম। ওকে থামানোর জন্যই গুলি ছোঁড়ে পুলিশ। তখন সেই গুলিতেই মারা যায় তুলসীরাম প্রজাপতি।

আগেই এই মামলায় বেকসুর খালাস করে দেওয়া হয়েছিল বিজেপি নেতা অমিত শাহ, রাজস্থানের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গুলাবচাঁদ কাটারিয়া, গুজরাত পুলিশের তৎকালীন প্রধান পিসি পাণ্ডেকে। মুম্বই আদালতের শুক্রবারের রায়ে ছাড় পেলেন বাকি পুলিশ অফিসাররাও।

২০১২  সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই হাইপ্রোফাইল এবং রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল মামলাটি গুজরাত থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মুম্বইতে। যে ২২ অভিযুক্তকে আজ বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে তাঁদের মধ্যে ২১ জন পুলিশ কর্মী এবং বাকি ব্যক্তি গুজরাতের একজন ফার্ম মালিক। মুম্বই-এর বিশেষ সিবিআই আদালতের এই রায়ের বিরু্দ্ধে উচ্চতর আদালতে আবেদন জানানো হবে বলে জানিয়েছে সোহরাবুদ্দিন শেখ-এর পরিবার।