সপ্তমবারের পরীক্ষাতেও উত্তীর্ণ অগ্নি-৪

ফের ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে সাফল্য পেল ভারত। রবিবার (২৩ ডিসেম্বর) ওড়িশা উপকূলে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি, পরমাণু অস্ত্র বহনক্ষম, ৪০০০ কিলোমিটার পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র অগ্নি-৪ পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ সফল হল। এদিন সকাল ৮.৩৫ মিনিটে বঙ্গোপসাগরের ডঃ আব্দুল কালাম দ্বীপে ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট রেঞ্জ (আইটিআর)-এর ৪ নম্বর লঞ্চ প্যাড থেকে একটি মোবাইল লঞ্চারের সাহায্যে এই ভূমি থেকে ভূমি ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করা হয়।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সূত্রে জানানো হয়েছে এই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের যা যা শর্ত ছিল তার প্রতিটিই সফল হয়েছে। একাধিক রেডার, ট্র্যাকিং ব্যবস্থা এবং রেঞ্জ স্টেশনগুলির গুলির মাধ্যমে ক্ষেপণাস্ত্রটির ফ্লাইট পারফরম্যান্স ট্র্যাক ও মনিটর করা হয়েছে। এর জন্য ওড়িশা উপকীল জুড়ে রেডার ও ইলেক্ট্রো-অপটিকাল সিস্টেম বসানো হয়েছিল। এছাড়া ক্ষেপনাস্ত্রটি যে লক্ষ্যে উৎক্ষিপ্ত হয়েছিল, সেই লক্ষ্যের কাছে দুটি নৌসেনা বাহিনীর জাহাজ ছিল চুড়ান্ত সময়ের পর্যবেক্ষণের জন্য।

এর আগে এই অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্রটির আরও ছয়টি ট্রায়াল হয়েছে। শেষবার ট্রায়া হয়েছিল চলতি বছরের ২ জানুয়ারি। এই একই লঞ্চপ্যাড থেকে সেই ট্রায়াল পরিচালনা করেছিল সেনাবাহিনীর স্ট্র্যাটেজিক ফোর্স কমান্ড। এদিনের উৎক্ষেপনটি ছিল বাহিনীর 'ইউসার ট্রায়াল'-এর অংশ।

সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই মিসাইলটির পাল্লা ৪০০০ কিলোমিটার। অর্থাত ভারতের থেকে ৪০০০ কিলোমিটার দূরের যে কোনও জায়গায় আঘাত হানা যাবে। নেভিগেশন. গাইডেন্স, ওয়ারহেড, ইঞ্জিন সব দিক থেকেই অনেক উন্নত প্রযুক্তি অগ্নি-৪'এ ব্যবহার করা হয়েছে। এর ন্যাভিগেশন সিস্টেমে, হাই অ্যাকিউরেসির 'রিং লেজার জাইরো-বেসড ইনার্শিয়াল ন্যাভিগেশন সিস্টেম বা 'রিনস' এবং সবচেয়ে আধুনিক এবং সঠিক 'মাইক্রো ন্যাভিগেশন সিস্টেম' বা 'মিংস' ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ক্ষেপণাস্ত্রটি একেবারে নিখুঁত নিশানায় আঘাত করতে পারে।

সেইসঙ্গে এতে রয়েছে অত্যাধুনিক কম্পিউটার এবং ফল্ট-টলারেন্ট সফ্টওয়্যার। যার ফলে যাত্রা পথে কোনও সফ্টওয়্যার সংক্রান্ত ত্রুটি হলে নিজেই ঠিক করে নিতে পারবে। এর হিটশিল্ড ৪০০০ ডিগ্রী তাপমাত্রা পর্যন্ত সহ্য করতে পারে। তাপমাত্রা মোকাবিলার জন্য দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি কার্বন-কার্বন কম্পোজি'এর হিট-শিল্ড দেওয়া হয়েছে। যেটি নিজে পুড়ে ভেতরের তাপমাত্রাকে ৫০ ডিগ্রী সেলসিয়াস নীচেই বজায় রাখে।

ইতিমধ্য়েই অগ্নি-১, ২, ৩ এবং পৃথ্বি-এর মতো ক্ষেপণাস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছে ভারতীয় সেনা বাহিনীর স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সেস কমান্ড-এর হাতে। এদিনের পরীক্ষা সফল হওয়ায় এরপর 'অগ্নী-৪'-কেও তাদের হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে।