করদাতাদের টাকায় মোদির ৮৪টি বিদেশ সফর, খরচ প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা


নয়াদিল্লি : সময়সীমা মাত্র সাড়ে চার বছর। আর এই সময়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিদেশ সফর এবং তাঁর সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের বিজ্ঞাপন বাবদ ব্যয় হয়েছে ৬ হাজার ৫৯০ কোটি টাকা। গোটা ব্যয়ভারই বহন করেছেন দেশের করদাতারা। সম্প্রতি প্রকাশিত সরকারি তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, গত সাড়ে বছরে ৮৪টি বিদেশ সফরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। খরচ হয়েছে আনুমানিক ২৮ কোটি মার্কিন ডলার বা প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। অপরদিকে, তাঁর সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প এবং সাফল্য প্রচারের জন্য খরচ করা হয়েছে প্রায় ৬৪ কোটি মার্কিন ডলার বা প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা।

বিদেশ সফরে কীভাবে এত টাকা খরচ হয়েছে, তার উত্তরও মিলেছে সরকারি তথ্য থেকে। জানা গিয়েছে, মোদির প্রতিটি বিদেশ সফরের জন্য বরাদ্দ এয়ার ইন্ডিয়া ওয়ান বিমানের রক্ষণাবেক্ষণ, নিরাপত্তার কারণে বিশেষ হটলাইন স্থাপনের ব্যয়ভারও সফরের খরচের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালীন প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরের খরচ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এক সাংসদ। তাঁর প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে একথা জানান বিদেশমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী ভিকে সিং। পাশাপাশি, নরেন্দ্র মোদির ছবি সহ কেন্দ্রীয় সরকারের প্রচারের খরচ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অপর এক সাংসদ। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোর সাংসদের প্রশ্নের জবাবে প্রচারখাতে কেন্দ্রের ব্যয় সংক্রান্ত তথ্য জানান। এনিয়ে আরও জানতে সরকারি মুখপাত্র সীতাংশু কর এবং বিজেপির মুখপাত্র জি ভি এল নরসিমা রাওয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনও জবাব মেলেনি।

প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হওয়ার পর থেকেই একের পর এক বিদেশ সফরে গিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। যা নিয়ে ক্রমাগত আক্রমণ শানিয়েছেন বিরোধীরা। ২০১৬ সালে নোটবাতিলের সময় জাপান সফরে যান মোদি। যে সময়ে দেশের প্রায় সমস্ত মানুষ ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়িয়ে, সেই সময়ে কীভাবে প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফরে যেতে পারেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। আফ্রিকার রোয়ান্ডা গ্রামের বাসিন্দাদের ২০০টি গোরু উপহার দেওয়া বা চীনের ইউনান প্রদেশে যোগ কলেজ খোলার জন্য মউ স্বাক্ষর করা নিয়েও মোদিকে তুলোধোনা করেন বিরোধীরা। যদিও প্রধানমন্ত্রীর সমস্ত বিদেশ সফর যে শুধুই অর্থ এবং সময়ের অপচয়, তা মানতে নারাজ রাজনৈতিক মহল। তাদের মতে, ডোকা লা সঙ্ঘাতের পর চীনের প্রেসিডেন্ট জি জিনপিংয়ের সঙ্গে মোদির বৈঠকের ফলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জটিলতা অনেকটাই কমে। বিশ্বের দরবারে ভারতের প্রভাব বাড়াতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প থেকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেন নরেন্দ্র মোদি। কৌশলগত ক্ষেত্রে তাঁর এই উদ্যোগ যে ভারতকে অনেকটাই এগিয়ে দেয়, তাও জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।