বিএড থাকলে প্রাথমিক টেট আপাতত নয়


শুধু ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টারি এডুকেশন বা ডিএলএড ডিগ্রিধারীরা নয়, বিএড ডিগ্রিধারীরাও প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা টেট-এ বসতে পারবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (এনসিটিই)। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার এনসিটিই-র সেই বিজ্ঞপ্তির উপরে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। অর্থাৎ বিএড থাকলেও আপাতত ওই টেট-এ বসা যাবে না।

দীর্ঘদিনের নিয়ম ছিল, প্রাথমিক টেট-এ ডিএলএড ডিগ্রিধারীরাই সুযোগ পাবেন। কিন্তু গত ২৮ জুন এনসিটিই জানায়, বিএড থাকলেও ওই টেট দেওয়া যাবে। তার বিরুদ্ধে মামলা করেন কয়েক জন ডিএলএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণরত তরুণ-তরুণী। তাঁদের বক্তব্য, এতে তাঁরা চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন।

মামলা করেছেন মহিবুর রহমান-সহ ৫৪ জন ডিএলএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণরত তরুণ-তরুণী। এ দিন শুনানিতে তাঁদের আইনজীবী শক্তিনাথ মুখোপাধ্যায়, সুবীর সান্যাল এবং রাতুল বিশ্বাস জানান, যাঁরা ডিএলএড প্রশিক্ষিত বা যাঁরা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, নতুন ব্যবস্থায় তাঁদের চাকরির সুযোগ কমে যাবে। কারণ, পঞ্চম-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বিএড ডিগ্রিধারী প্রার্থীরা বসতে পারেন। উচ্চ প্রাথমিক (পঞ্চম-অষ্টম) স্তরের টেট-এ বসতে পারেন ডিএলএড ও বিএড ডিগ্রিধারী দু'ধরনের প্রার্থীই। প্রাথমিক টেট ছিল শুধু ডিএলএড ডিগ্রিধারীদের জন্য। নতুন ব্যবস্থায় যাঁরা পঞ্চম থেকে দ্বাদশ স্তরের জন্য বিএড ডিগ্রি অর্জন করেছেন, তাঁরাও প্রাথমিকের টেট দেবেন। এটা ঠিক নয়।

এনসিটিই-র আইনজীবী শৌভিক নন্দী আদালতে জানান, এই বিজ্ঞপ্তি আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে বলবৎ হচ্ছে না। রাতুলবাবুর কথায়, ''তখন বিচারপতি জানান, আইনজীবী নিজে থেকেই যখন বলছেন বলবৎ করা হচ্ছে না, তখন তাঁর আর কিছু বলার নেই। বিচারপতিও জানিয়ে দেন, মামলার আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে এই বিজ্ঞপ্তি কার্যকর হচ্ছে না।'' বিচারপতি এনসিটিই-র ২৮ জুনের ওই বিজ্ঞপ্তির উপরে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দেন।

আইনজীবী মহলের ব্যাখ্যা, ওই আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে কার্যকর না-হওয়ার অর্থ, কারও ক্ষেত্রেই ওই বিজ্ঞপ্তি কার্যকর হবে না। পশ্চিমবঙ্গ তো বটেই, সারা দেশে এই বিজ্ঞপ্তির আর কোনও অর্থ থাকল না। 

পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের এক কর্তা জানান, প্রাথমিকের পড়ুয়াদের সঙ্গে উচ্চ স্তরের পড়ুয়াদের মূলগত পার্থক্য রয়েছে। ডিএলএডে ফলে যে-সব প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, বিএডে সেটা থাকে না। এনসিটিই তুঘলকি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। রাজ্যের প্রায় ৬০০টি ডিএলএড কলেজ এবং সেখানকার পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে তাঁরা নিশ্চিন্ত হলেন।