বছরের শেষ শহরে জোড়া খুন


বছরের শেষ দিনে শহরের দু'‌জায়গায় খুন হলেন দুই যুবক। সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ প্রগতি ময়দান থানা এলাকার, সায়েন্স সিটি লাগোয়া আড়ুরোতায় জলপ্রকল্পের সামনে রাস্তার ধারে থাকা ঝোপের ভিতর এক যুবকের উপর হয়ে থাকা মৃতদেহ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। রাস্তার ধারে দাঁড় করানো ছিল একটি অ্যাপ ক্যাব। খবর পেয়ে প্রগতি ময়দান থানার পুলিস গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। অ্যাপ ক্যাবের নম্বর দেখে প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানতে পারে, মৃত যুবকের নাম ইমরান খান। তিনি সিআইটি রোডের বাসিন্দা। ৩২ বছরের ইমরান পেশায় অ্যাপ ক্যাব চালক। মৃতদেহের শরীরে, কানের পাশে গভীর ক্ষত রয়েছে। মাথার পিছনে ভারী বস্তু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন। ইমরানের বাড়ির লোকজন দেহ শনাক্ত করে পুলিসে জানিয়েছেন, সোমবার ভোররাত একটা নাগাদ ইমরান গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছিলেন। পরে ফোনে তিনি বাড়িতে জানান, তিনি যাত্রী নিয়ে যাচ্ছেন। ভোররাত প্রায় দুটো পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে বাড়ির কথা হয়েছিল। পুলিস জানিয়েছে, রাস্তার ধারের সিসিটিভি–র ফুটেজে দেখা যাচ্ছে গাড়িটি ভোররাত আড়াইটে নাগাদ আড়ুপোতায় আসে। কিন্তু কারা বা কেন ইমরানকে খুন করল তা নিয়ে ধন্দে পুলিস। কারণ, ইমরানের মোবাইল ফোন ছাড়া বাকি কিছুই খোওয়া যায়নি। এমনকি গাড়ির লক খোলা থাকলেও গাড়ির ভিতর থেকেও কিছু হারায়নি। যাদের নিয়ে ইমরান গিয়েছিলেন তারাই ইমরানকে খুন করেছে, নাকি এর পিছনে ব্যক্তিগত আক্রোশ রয়েছে তার তদন্তে নেমেছে প্রগতি ময়দান থানা এবং লালবাজারের হোমিসাইড শাখার অফিসাররা।

অন্যদিকে, এদিনই ট্যাংরার পালাডাঙায় খুন হন তারক মন্ডল নামে এক যুবক। অভিযোগ, তারক নিজের বাড়ির সামনে কিছু কাজ করছিলেন। সেসময় বাইকে চেপে স্থানীয় ছয় দুষ্কৃতী তাঁর কাছে গিয়ে প্রথমে তারককে মারধর করে। তিনি আহত হয়ে পড়ে গেলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার নাম করে বাইকে তুলে কিছু দূরে একটি মাঠে নিয়ে গিয়ে কোপাতে থাকে। রক্তাক্ত তারক লুটিয়ে পড়লে তাঁকে ওভাবেই ফেলে রেখে বাইকে চম্পট দেয় আততায়ীরা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তারকের। এরপরই ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা দেহ আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি, আততায়ীরা সবাই স্থানীয় দুষ্কৃতী। অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি দিতে হবে। বিক্ষোভ সামলাতে ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিসবাহিনীর সঙ্গে পৌঁছন কলকাতা পুলিসের ডিসি দেবস্মিতা দাস। প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, রবিবার স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে পিকনিকে গিয়েছিলেন তারক। সেখানেই কোনও গন্ডগোলের জেরে এই খুন, নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিস।