মানসিক ভারসাম্যহীনকে নগ্ন করে বেধড়ক মার, কাঠগড়ায় পুলিশ


মুখ থুবড়ে পড়ে আছেন যুবক। শরীরে ছোপ ছোপ রক্ত। পরনে একটা সুতোও নেই। টানা পিটিয়ে চলেছেন পুলিশকর্মীরা। এমন নারকীয় কাণ্ড চলল হাওড়া স্টেশন লাগোয়া পুলিশ কিয়স্কের পাশে। মঙ্গলবার রাত ন'টা নাগাদ পুলিশের এই নৃশংস রূপ দেখা গেল।

যুবকের অপরাধ কী? যদি তিনি কোনও অপরাধ করেও থাকেন তাহলে পুলিশ তার গায়ে হাত দেয় কোন সাহসে? 'সারকামস্টেনশিয়াল এভিডেন্স' দেখে কেন ওই অপরাধীদের সাজা হবে না? বুধবার দিনভর হাওড়া স্টেশন চত্বরে এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খেয়েছে। কিন্তু কেন? স্টেশনে যাওয়ার পথে প্রকাশ্যে এত হিম্মত হয় কী করে কয়েকজন পুলিশের। উত্তর পাওয়া গিয়েছে পুলিশেরই অন্য একটি অংশের কাছে। ওই যুবক ভবঘুরে। নাওয়া-খাওয়ার ঠিক ছিল না। কেউ খাবার ছুড়ে দিলে খেত, নাহলে স্টেশন চত্বরে ঘুরে বেড়াত। পোশাক ছিল ছেঁড়া এবং ময়লা। মঙ্গলবার রাতে ওই যুবক পুলিশ কিয়স্কের সামনে গিয়ে কাচের উপর চাপড় মারতে শুরু করেন। এরপর কয়েকজন পুলিশ কর্মী বেরিয়ে এসে বেধড়ক মারেন।

ভবঘুরে ও মানসিক অসুস্থদের রাস্তা থেকে তুলে এনে চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। রাজ্য সরকারের এই বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশিকা আছে। পুলিশের সেকথা অজানা নয়। তাহলে কেন এক নিরীহ যুবকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন গোলাবাড়ি থানার পুলিশকর্মীরা। নিত্যযাত্রীরা জানিয়েছেন, স্টেশনে ঢোকার রাস্তায় এমন নির্মম ঘটনা আগে কখনও হয়নি। একটি মানবাধিকার সংগঠন এই বিষয়ে সরব হয়েছে। দোষী পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে। প্রায় আধমরা অবস্থায় যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাস্থলটি গোলাবাড়ি থানা এলাকায়। নিজস্ব সোর্স মারফত খবর পান আইসি। তাঁর হস্তক্ষেপেই গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনা এড়ানো গিয়েছে। যুবকের নাম বা পরিচয় জানা যায়নি। কোনও অভিযোগও দায়ের হয়নি।