ভাইপোর সঙ্গে প্রেমিকার সম্পর্ক, সন্দেহের বশে খুন করে তিনবছর পর ধৃত কাকা


প্রেমিকার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে ভাইপোর। এই সন্দেহেই ৩৭ বছরের ব্যক্তি খুন করল তার ভাইপোকে। তিনবছর আগে হওয়া এই ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে হায়দরাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করেছে দিল্লি পুলিস।

পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ওড়িশার গঞ্জামের বাসিন্দা বিজয় কুমার মহারানা ২০১২ সালে দিল্লিতে যায়। তার প্রেমিকাও দিল্লিতেই থাকতেন। ২০১৫ সালে বিজয়ের ভাইপো জয় প্রকাশও হায়দরাবাদ থেকে দিল্লিতে চলে আসেন। রাজধানীর দ্বারকা এলাকায় দু'‌জনে একসঙ্গে ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকত বলে জানা যাচ্ছে। নয়ডার ১৪৪ সেক্টরের একটি আইটিতে কাজ করত বিজয়। অন্যদিকে গুরগাঁওয়ের একটি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন জয়। বিজয়ের সঙ্গে থাকাকালীনই জয়ের সঙ্গে তার প্রেমিকার পরিচয় হয় এবং ক্রমে জয় ও বিজয়ের প্রেমিকা বেশ ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। যেটা বিজয়ের একদমই পছন্দ ছিল না। সেটা নিয়ে প্রায়ই মনমরা থাকত অভিযুক্ত বিজয়। এরপরই সে সিদ্ধান্ত নেয় জয়কে খুন করার।

পুলিস জানিয়েছে, ২০১৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি জয় যখন ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন তখন বিজয় সিলিং ফ্যানের মোটর দিয়ে তাঁর মুখ থেতলে দেয়। ওই ফ্যানটি বাড়ি মেরামতের জন্য খুলে রাখা ছিল। এরপর বিজয় তার ভাইপোর দেহটি টানতে টানতে নিয়ে যায় বারান্দায় এবং সেখানেই মাটি চাপা দিয়ে পুঁতে দেয়। আগে থেকেই এই ব্যবস্থা করে রেখেছিল বিজয়। সেখানে বিজয় চারাগাছ পুঁতে রাখে যাতে কেউ কোনও সন্দেহ না করে। এই ঘটনার একসপ্তাহ পর বিজয় পুলিসের কাছে গিয়ে জয়ের বিষয়ে নিঁখোজ অভিযোগ দায়ের করে। পুলিসকে বিজয় জানায় যে জয় বন্ধুদের সঙ্গে বেড়িয়েছিল, কিন্তু তারপর বাড়ি ফিরে আসেনি। অভিযুক্ত ওই ফ্ল্যাটে দু'‌মাস থাকার পর দিল্লির নানগ্লোয়িতে চলে যায়। ২০১৭ সালে সে হায়দরাবাদে বদলি হয়ে যায়।

এই ঘটনা নাটকীয় মোড় নেয় ২০১৮ সালের অক্টোবরে। বিজয় দ্বারকার যে আবাসনে থাকত তার সংস্কারের সময়ই জয়ের কঙ্কাল উদ্ধার হয়। কঙ্কালটি নীল রঙের জ্যাকেট, মাদুর, শার্ট, কম্বল ও চাদর দিয়ে মোড়ানো ছিল। পুলিস এই ফ্ল্যাটের মালিকের কাছ থেকে বিজয়ের বিষয়ে জানতে পারে। ফ্ল্যাটের মালিক বিক্রম সিং জানান যে, বিজয় চলে যাওয়ার পর আরও দুই ভাড়াটে এই ফ্ল্যাটে থাকতেন। তদন্তে পুলিস জানতে পারে, বিজয় অনেকদিন ধরেই নিখোঁজ এবং তার পরিবার–বন্ধু কেউই জানে না সে কোথায় আছে। এমনকী সে নিজের মোবাইল নম্বরও বদলে নিয়েছে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে সব টাকাও তুলে নেয় বিজয়। একসপ্তাহ খোঁজার পর পুলিস হায়দরাবাদে বিজয়ের সন্ধান পায়। দিল্লি পুলিস ২৬ ডিসেম্বর বিশাখাপত্তনম যায় এবং ১ জানুয়ারি বিজয়ের খোঁজে হায়দরাবাদে আসে। রবিবারই বিজয়কে গ্রেপ্তার করে দিল্লি নিয়ে আসা হয়েছে।