বউয়ের সঙ্গে পরকীয়া! সন্দেহের বশে ভাইয়ের গলায় ব্লেড চালাল যুবক


কাটোয়া: স্ত্রীর সঙ্গে ভাইয়ের পরকীয়া চলছে। এই সন্দেহে ঘুমন্ত ভাইয়ের গলায় ব্লেড চালিয়ে দিলেন দাদা। আহত যুবকের নাম বিশ্বনাথ মাঝি (২৬)। রবিবার রাতে ঘটনাটি গুসকরা পুরসভা এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। ওই ঘটনার পরে অভিযুক্ত দাদা মহাদেব মাঝি (৩২)কে আটক করে পুলিশ। যদিও পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, সোমবার বিকেল পর্যন্ত এনিয়ে নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। গুসকরা পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার বাসিন্দা মহাদেব মাঝি পেশায় কাঠমিস্ত্রি। তাঁর ভাই বিশ্বনাথ মার্বেল মিস্ত্রির কাজ করেন। একই বাড়িতে দুই ভাই থাকতেন। মহাদেবের প্রায় ১০ বছর আগে বিয়ে হয়েছে। তাদের ৯ বছরের একটি ছেলে ও ৭ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। বিশ্বনাথ অবশ্য অবিবাহিত। তাঁদের বাবা মা কিছুটা দূরে পৃথক একটি বাড়িতে থাকেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত শনিবার রাত থেকেই। শনিবার পাড়ার এক বৃদ্ধা মারা গিয়েছিলেন। মৃতদেহ দাহ করতে পাড়ার অন্যদের সঙ্গে গিয়েছিলেন মহাদেব। অনেক রাতে শবদাহ করে বাড়ি ফিরেছিলেন। রবিবার সকাল থেকেই প্রতিবেশিরা দেখেন, স্ত্রীর সঙ্গে মহাদেবের ঝামেলা শুরু হয়। মহাদেব প্রতিবেশীদের কাছে বলেন, শনিবার গভীর রাতে বাড়িতে ঢোকার পর তিনি স্ত্রীর সঙ্গে ভাই বিশ্বনাথকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেন। তারপরেই অশান্তি শুরু হয়। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, রবিবার প্রায় সারাদিন ধরে স্ত্রীর সঙ্গে মহাদেবের অশান্তি চলছিল। তার জেরে মহাদেবের স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করতে যান। প্রতিবেশী কয়েকজনের চোখে পড়ে গেলে তারা তাঁকে উদ্ধার করেন। তারপর তাঁকে বাপের বাড়ি মঙ্গলকোটে গতিষ্ঠা গ্রামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। রাতেই মহাদেবের স্ত্রী মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বাপেরবাড়ি চলে যান।

অশান্তি কিন্তু এখানেই শেষ হয়নি। স্ত্রী চলে যাওয়ার পর ভাইয়ের সঙ্গেও একপ্রস্থ ঝগড়া হয় মহাদেবের। রবিবার রাতে ছেলেকে নিয়ে একটি ঘরে শুয়েছিলেন মহাদেব। তার পাশের ঘরে শুয়েছিলেন ভাই বিশ্বনাথ। দুটি ঘরের মাঝে দরজা নেই। পর্দা দেওয়া থাকে। অভিযোগ, রাত প্রায় সাড়ে বারোটা নাগাদ মহাদেব একটি ব্লেড নিয়ে ঘুমন্ত ভাইয়ের গলায় চালিয়ে দেয়। বিশ্বনাথ চিৎকার করে প্রতিবেশীদের ডাকেন। তাঁরা এসে মহাদেবকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। হামলার পর অবশ্য মহাদেব পালাননি। পুলিশ সোমবার ভোরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বিশ্বনাথের মারা যাওয়ার কোনও আশঙ্কা নেই। বিশ্বনাথ অবশ্য এনিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। মহাদেব মাঝির স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছিল পুলিশ। জেরায় তিনি জানিয়েছেন, স্বামী সন্দেহ করতেন দেওরের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে তাঁর। সেই কারণে চলত অত্যাচার। কিন্তু সম্পর্কের ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু জানাননি তিনি।