৪০ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার রামুয়ার ফ্ল্যাট থেকে


কুখ্যাত দুষ্কৃতী রামুয়া–‌হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৫ অপরাধীকে খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য সোদপুর অমরাবতীতে রামুয়ার ফ্লাটে আনে খড়দা থানার পুলিশ। সোমবার দুপুর দেড়টা নাগাদ। রামুয়ার স্ত্রী কাজল, ছেলে সমীর, ছেলের তিন বন্ধু প্রশান্ত, বিশাল এবং শ্যামসুন্দরকে। প্রথমে বাড়িতে ঢোকানো হয় রামুয়ার তিন বন্ধুকে। 

তারা ঘটনার দিন রাতে কীভাবে বাড়িতে ঢুকেছিল তা অভিনয় করে দেখায়। এটাও দেখায়, তারা কীভাবে রামুয়াকে ঘুমন্ত অবস্থায় খুন করে সিঁড়ি দিয়ে নেমে বিনা বাধায় পালিয়ে যায়া। ওরা যখন গুলি করে রামুয়াকে, তখন রামুয়ার স্ত্রী, ছেলেমেয়ে কি পজিশনে ছিল, তা–‌ও জানায় তারা। এর পর নিয়ে আসা হয় রামুয়ার স্ত্রী কাজল এবং ছেলে সমীরকে। তারা দু'‌জনে সেদিনের ঘটনা অভিনয় করে জানায়। খুনের পূর্বমুহূর্তে তারা কী করছিল, খুন এবং খুনের পর তারা কে কী করেছিল, তা সব অভিনয় করে দেখায়। রামুয়ার স্ত্রী এবং ছেলেকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার পর পুলিশ জানতে পারে, রামুয়ার ফ্ল্যাটে অনেক পিস্তলের কার্তুজ আছে। এদিন ঘটনার পুনর্নির্মাণের সময় তারা ওই ফ্ল্যাট থেকে লুকোনো কার্তুজগুলি বের করে দেয়। কার্তুজের সংখ্যা ৪০। একটি কার্তুজ পুলিশ উদ্ধার করে রাস্তার ধার থেকে। হাওড়ার ত্রাস রামুয়া বহু খুন, অপহরণ–‌সহ নানা কুকর্মের আসামি। বেশির ভাগ সময় জেলে থাকত। জেল থেকেই কাজলকে দিয়ে তোলা আদায়ের কাজ করাত রামুয়া। রামুয়ার স্ত্রী কাজলও একবার গ্রেপ্তার হয় মাদক আইনে। রামুয়ার স্ত্রী তার ছেলেকে বাবার অন্ধকার জগতের ছায়া থেকে দূরে সরিয়ে রেখে অন্যভাবে মানুষ করে তোলার চেষ্টা করে। তার জন্য বাড়ি থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে দিয়ে পড়াশোনা করানো হয়।

এর মধ্যে কাজল এবং তার পরিবারকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসে হাওড়ার বাসিন্দা জীবনবিমা কোম্পানির এজেন্ট কার্তিক যাদব। তার সঙ্গে কাজলের সম্পর্ক গড়ে ওঠার খবর চলে যায় জেলবন্দি রামুয়ার কাছে। জেলে বসেই কার্তিককে খুনের হুমকি দেয়। এমনিতেই রামুয়ার স্ত্রী রামুয়ার প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে উঠেছিল। তারপর কার্তিককে হুমকি দেওয়া ভাল চোখে নেয়নি তারা। কার্তিক রামুয়াকে শেষ করার চেষ্টা করে গোপনে। কাজলের ছেলেও তার তিন বন্ধুর সঙ্গে বাবাকে হত্যার ব্লু–‌প্রিন্ট তৈরি করে। তাতে যোগ দেয় মা কাজল ও হাওড়ার কাকু কার্তিক। ঠিক হয়,  এর জন্য সমীরের বন্ধুদের ৪ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। কার্তিক অগ্রিম হিসেবে ১ লক্ষ টাকা দেয়। সেই টাকা থেকে ৭০ হাজার টাকা খরচ করে সমীরের বন্ধুরা। নির্ধারিত ছক অনুযায়ী খুনের পরিকল্পনা সম্পূর্ণ হয়। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলেও কিছু কাঁচা কাজ অপরাধীদের সকলকে ধরিয়ে দেয়।‌‌