সাতদিন পরও কুয়োয় আটকে দু’‌বছরের জুলেন, চলছে দ্বিতীয় কুয়ো খোঁড়ার কাজ


গর্তে পড়ে যাওয়ার পর পেরিয়ে গিয়েছে সাত দিন। তবু অব্যাহত উদ্ধারকাজ। যদিও আশঙ্কা, দু'বছরের খুদে জুলেন হয়তো আর বেঁচে নেই। উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, এখনও তেমন আশা দেখতে পাননি তাঁরা। শিশুটিকে উদ্ধার করতে আরও কয়েক দিন সময় লেগে যেতে পারে।
১৩ জানুয়ারি দক্ষিণ স্পেনের মালাগো এলাকায় খেলতে খেলতে গর্তের মতো একটি কুয়োর ভিতরে পড়ে যায় ছোট্ট জুলেন। ১০০ মিটার গভীর ওই কুয়োর অতলে তলিয়ে যায় সে। কিন্তু কুয়োটির ব্যাস মাত্র দশ ইঞ্চি। ফলে সেখানে নেমে জুলেনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, তাঁরা ক্যামেরা ব্যবহার করে শিশুটির অবস্থান নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু মাত্র ১০ ইঞ্চি চওড়া মুখ দিয়ে সেটাও ঠিক মতো সম্ভব হচ্ছে না। শনিবার একটা বিশাল ড্রিল মেশিন এনে, ওই কুয়োটির পাশেই আরও একটি কুয়ো খনন করতে শুরু করেছেন উদ্ধারকারীরা। আশা করছেন, আসল কুয়োর সমান্তরাল ভাবে নীচ পর্যন্ত পৌঁছে যদি কোনও ভাবে শিশুটিকে উদ্ধার করা যায়। দিন–রাত এক করে কাজ করে চলেছেন উদ্ধারকর্মীরা। তাঁদের যুদ্ধকালীন তৎপরতায় স্পষ্ট, এক–একটা সেকেন্ডও গুরুত্বপূর্ণ জুলেনের প্রাণের জন্য।

উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, নানা ভাবে চেষ্টা করতে গিয়ে কুয়োটির ভেতর থেকে কিছু ময়লা উঠে আসে। তার মধ্যে পাওয়া যায় চুল। ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখা গেছে, ওই চুল জুলেনেরই। এখনও পর্যন্ত সে বেঁচে আছে বলে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলেই জানিয়েছেন উদ্ধাকারীরা। তবে হাল ছাড়ছেন না কেউই। এক উদ্ধারকারী বলেন, '‌এখন সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, যত দ্রুত সম্ভব শিশুটির কাছে পৌঁছানো। সেটা লম্বালম্বি ভাবে না হলে, আড়াআড়ি ভাবেই করতে হবে। সেই জন্যই দ্বিতীয় কুয়োটি খোঁড়া হচ্ছে।'‌ সব ঠিক থাকলে ১৫ ঘণ্টা লাগবে দ্বিতীয় কুয়োটা পুরোপুরি খুঁড়তে, জানিয়েছেন তিনি। তবে ততক্ষণে জুলেনকে জীবিত উদ্ধার করা যাবে কি না, সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে।

স্পেনের এক সরকারি কর্মকর্তা মারিয়া গামেজ বলেন, '‌যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা জুলেনকে উদ্ধার করতে পারছি, ততক্ষণ এই তৎপরতা চলবে। আমরা আত্মবিশ্বাসী, খোঁজ মিলবেই। বেঁচে নেই, এটাও জোর দিয়ে বলছি না আমরা। কারণ অনেক আশ্চর্য ঘটনা তো ঘটেই।'‌ জুলেনের মা–বাবার জন্য এই সময়টা খুবই দুঃসহ। বছর দুয়েক আগে জুলেনের দাদা, তাঁদের বড় ছেলেকে মাত্র তিন বছর বয়সেই হারিয়েছেন তাঁরা। তার হৃদপিণ্ডের অসুখ ছিল। তার পর থেকে জুলেনকে আঁকড়েই বাঁচছিলেন তার মা–বাবা।