উনিশ টন আলু বেচে মিলল ৪৯০ টাকা! পুরোটাই মোদিকে পাঠালেন কৃষক


দেশে কৃষকদের দুর্দশার ছবি আরও একবার প্রকাশ্যে এল উত্তরপ্রদেশের আগ্রার এক ঘটনায়। কষ্টার্জিত টাকা খরচ করে ফলানো ১৯ টন আলু বিক্রি করে এক কৃষকের হাতে এল মাত্র ৪৯০ টাকা। প্রতিবাদে পুরো টাকাটাই প্রধানমন্ত্রীর নামে মানি অর্ডার করলেন কৃষক। এর আগে মহারাষ্ট্রের এক পিঁয়াজ চাষি একই কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন। ৭৫০ কেজি পিঁয়াজ বেচে তিনি পেয়েছিলেন ১ হাজার ৬৪ টাকা। পুরোটাই তিনি পাঠিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীকে।

আগ্রার প্রদীপ শর্মা প্রতিবছরের মতো এবছরও তাঁর মোট জমির বেশিরভাগটাতেই আলুচাষ করেছিলেন। ভাল ফলন হওয়ায় মোট ১৯ টন আলু উৎপন্ন হয়েছিল। প্রদীপ জানিয়েছেন, আলু বিক্রি করে তিনি ৯৪ হাজার ৬৭৭ টাকা পেয়েছিলেন৷ এর মধ্যে ৪২ হাজার ৩০ টাকা মোটর ভাড়া, ৯৯৮ টাকা আনলোডিং চার্জ, ৩৭৯০ টাকা দালাল খরচা, ১০০ টাকা ড্রাফ্ট কমিশন এবং বাছাই করতে ৪০০ টাকায় খরচ হয়ে যায়৷ এই সব মিলিয়ে প্রায় ৪৮ হাজার ১৮৭ খরচ হয়ে যায় তাঁর৷ বেচে ছিল ৪৬ হাজার ৪৯০ টাকা৷ এরপর কোল্ড স্টোরেজে প্রত্যেক প্যাকেটের জন্য ১২৫ টাকা অর্থাৎ, ৪৬ হাজার টাকা দিতে হয় কোল্ড স্টোরেজের মালিককে৷ এরপর আয় হিসেবে তার কাছে বেচে ছিল মাত্র ৪৯০ টাকা৷ রাগে সেই পুরো টাকাটাই মোদিকে পাঠিয়ে দিয়েছেন ওই কৃষক।

যদিও তিনি মুখে বলেছেন, "প্রধানমন্ত্রীর উপর এমনিতে তাঁর কোনও রাগ নেই। তিনি শুধু দেখাতে চান দেশে কৃষকদের প্রকৃত অবস্থাটা কী। প্রধানমন্ত্রী কী প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন এবং বাস্তবে কী হচ্ছে। কৃষক ৭০০-৮০০ টাকা খরচ করে এক কুইন্টার আলু ফলান। অথচ, সেই আলুর ন্যূনতম সমর্থন মূল্য মাত্র ৫৯০ টাকা।" আগ্রার আলুচাষীদের দুর্দ্দশা নিয়ে ইতিমধ্যেই উপমুখ্যমন্ত্রী দীনেশ শর্মার কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন প্রদীপ শর্মা। তিনি বলছেন, এই নিয়ে লাগাতার চার বছর আলু চাষ করে লোকসানের মুখ দেখতে হয়েছে তাঁকে। এর আগে একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি লিখে আত্মহত্যা করার অনুমতিও চেয়েছেন ওই কৃষক।