কলেজে না এসেই ভর্তি, নথি পরীক্ষা হবে পরে


স্নাতক স্তরে ভর্তির জন্য কলেজে আসতে হবে না ছাত্রছাত্রীদের। আবেদন করা থেকে শুরু করে ব্যাঙ্কে টাকা জমা দেওয়া— পুরো বিষয়টিই হবে অনলাইনে। প্রথম ক্লাস শুরুর দিনই কলেজে আসবেন পড়ুয়ারা। তথ্য যাচাই বা ভেরিফিকেশন তখনই হবে। মঙ্গলবার রাজ্যের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকে এমনই নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি।

চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেম (‌সিবিসিএস)‌–এ পরীক্ষায় বসতে গেলে ক্লাসে ৬০ শতাংশ হাজিরা থাকা বাধ্যতামূলক। এই বিষয়টি যেন কলেজের পক্ষ থেকে ভর্তির সময়ই পড়ুয়াদের জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে তা দেখার নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। একই সঙ্গে স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তির ক্ষেত্রে ৬০ ও ৪০–এর যে অনুপাতটি আছে, সে ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মতামত চাওয়া হয়েছে। সিবিসিএসে হাজিরার পাশাপাশি নিয়মিত ক্লাস করার বিষয়টিও রয়েছে। এই প্রসঙ্গে কলেজ শিক্ষকদের প্রিপ্যারেটরি ডে হিসেবে একদিনের ছুটির প্রসঙ্গটি ওঠে। এ নিয়ে খুব শিগগির দপ্তরের পক্ষ থেকে নির্দেশিকা জারি করা হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। প্রসঙ্গত, সপ্তাহে পাঁচ দিনের বদলে ছ'‌দিন কলেজে আসুন শিক্ষকরা, এমনটাই চায় উচ্চশিক্ষা দপ্তর। কারণ সিবিসিএসে ক্লাসের সংখ্যার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নিয়োগ–প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে বলেছেন তিনি। অবিলম্বে নিয়োগ না করা হলে যে পদগুলির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তা বাতিল করা হবে বলেও জানান তিনি।
ভর্তি নিয়ে গোলমালের জেরে গত জুলাই মাসেই শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ভর্তির আগে ভেরিফিকেশন এবং কাউন্সেলিং আর হবে না। ভর্তির পুরো প্রক্রিয়াটাই হবে অনলাইনে। এদিন উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকের পর শিক্ষামন্ত্রী বলেন, '‌ভর্তি নিয়ে নানা বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটে। এতে রাজ্যের সুনাম নষ্ট হয়। তাই এবার থেকে ভর্তি হওয়ার আগে কাউকে কলেজে আসতে হবে না। ভর্তির জন্য পড়ুয়ারা অনলাইনে আবেদন করবে। কলেজের ঠিক করা একটি বা দুটি ব্যাঙ্কে টাকা জমা দেবে। ভেরিফিকেশন হবে ক্লাস শুরুর পর। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে বলা হয়েছে, তারা যেন কলেজগুলির সঙ্গে ভর্তি নিয়ে বৈঠকে বিষয়টি জানিয়ে দেয়। দপ্তরও জানাবে।'‌ কিছুদিন আগেই হাজিরা নিয়ে বিভিন্ন কলেজে বিক্ষোভ হয়। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, '‌হাজিরা নেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে কিছু অসন্তোষ আছে। তার কিছুটা সত্যিও বটে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে বলা হয়েছে, কলেজগুলিকে যেন প্রথম দিন থেকেই পড়ুয়াদের ৬০ শতাংশ উপস্থিতির বিষয়টি তারা জানিয়ে দেয়। যাতে পড়ুয়ারাও সতর্ক হতে পারে।'‌ স্নাতকোত্তরে ভর্তির ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ আসনে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা সরাসরি ভর্তি হতে পারেন। বাকি ৪০ শতাংশ আসনে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা ভর্তি হতে পারেন। নিয়মটির পুনর্মূল্যায়ন করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে জানাতে বলা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, '‌আমরা চাই রাজ্যের মেধা যেন রাজ্যেই থাকে।'‌ প্রসঙ্গত, এই ৪০ শতাংশ আসনে ভিন্‌রাজ্যের পড়ুয়াদের ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে। দু'‌বছর আগে কলেজ শিক্ষকদের অনুষ্ঠানে ৬ মাসের মধ্যে নিয়োগ–প্রক্রিয়া শেষ করতে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এখনও কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ–প্রক্রিয়াই শেষ হয়নি। কোথাও ২০, কোথাও ৩০ শতাংশ নিয়োগ হয়েছে। যা নিয়ে এদিন উষ্মা প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, '‌সংরক্ষিত আসনে নিয়োগে সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি। অবিলম্বে শিক্ষক নিয়োগ না করলে অনুমোদিত পদ বাতিল করা হবে। '‌