২০১৮ তে কাশ্মীরে সবথেকে বেশি সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন পাকিস্তানের


শ্রীনগর: দেড় দশকে সবথেকে বেশি সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন হয়েছে ২০১৮ সালে৷ পরিসংখ্যান বলছে গত বছর সীমান্তের ওপার থেকে প্রায় তিন হাজার বার গোলা বারুদ ছোঁড়া হয়েছে এপ্রান্তে৷ যা ২০১৭ সালের তুলনায় তিনগুণ বেশি৷ সংঘর্ষবিরতির বলি হয়েছেন ৬১ জন৷ ২৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন৷ সোমবার ভারতীয় সেনার তরফে এই পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়৷

সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনে দেড় দশকের মধ্যে ২০১৮ সালে পাক সেনা অতীতের সব নজিরকে ছাপিয়ে যায়৷ বিবৃতি জারি করে সেনার তরফে এই তথ্য জানানো হয়েছে৷ সেখানে বলা হয়েছে, লাইন অফ কন্ট্রোল ও আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছে থাকা গ্রাম ও চেকপোস্টগুলি লক্ষ্য করে অনবরত হেভি শেলিং করে পাক সেনা৷ সেখানকার মানুষদের মনের মধ্যে ভয়ভীতির সঞ্চার ঘটাতে পাক সেনার এই কৌশল৷

সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করাকে অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছে পাকিস্তান৷ তার প্রমাণ ২০১৮ সালে ২৯৩৬বার সংঘর্ষবিরতির ঘটনা৷ পাক সেনার হেভি শেলিং প্রাণ কেড়েছে ৬১ জন মানুষের৷ আহতের সংখ্যা ২৫০ জনের বেশি৷ সংঘর্ষবিরতির জেরে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সীমান্ত ঘেঁষা কাঠুয়া, রাজৌরি ও পুঞ্চ জেলার গ্রামগুলিতে বেশি৷ পাক সেনার শেলিং তাদের স্বাভাবিক জীবন যাপনে ব্যাঘাত ঘটায়৷ জীবন সংশয়ের কারণে অনেকে ভিটেমাটি ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন৷

সীমান্তে শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা বারে বারে ভঙ্গ করার অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে৷ ভারতীয় সেনার সঙ্গে ২০টির বেশি ব্রিগেড কমান্ডার ও ফ্ল্যাগ মিটিংয়ে সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রক্ষা করে না পাক সেনা৷ ২০১৭ সালে পাকিস্তান ৯৭১ বার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে৷ সেই বছর ১৯ জন জওয়ান শহিদ হন৷ ১২ ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যু হয়৷ ১৫১ জন আহত হয়৷

২০০৩ সালে এনডিএ সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি করে৷ পরপর তিন বছর ২০০৪, ২০০৫ ও ২০০৬ সালে একটিও সীমান্তে গোলা বারুদ ছোঁড়াছুঁড়ির ঘটনা ঘটেনি৷ ২০০৭ সালের পর থেকে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি ভাঙা শুরু করে পাকিস্তান৷ সেই বছর ২১বার চুক্তি লঙ্ঘন করে পাক সেনা৷ তারপর থেকে প্রতি বছর বাড়তে বাড়তে তিন অংক ছুঁয়ে ফেলে৷