কৃষকবন্ধু চাষিদের স্মার্ট কার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের


বর্ধমান: মুখ্যমন্ত্রীর প্রকল্পগুলির মধ্যে অন্যতম এক প্রকল্প কৃষকবন্ধু৷ এই প্রকল্পের আওতায় চাষিদের স্মার্ট কার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার৷ তিনি পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান ও হুগলি এই তিন জেলার কৃষি দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৃহস্পতিবার একটি বৈঠক করেন৷ বৈঠক শেষ তিনি এই সিদ্ধান্ত জানান৷

মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার জানিয়েছেন, সাধারণ রবি ও বোরো মরশুমের আগে এই কৃষি সহায়ক অর্থ দেওয়ার কথা। কিন্তু যেহেতু মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন ৩১ ডিসেম্বর, তাই নভেম্বর মাসে যে অর্থ দেওয়ার কথা তা দেওয়া শুরু হচ্ছে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে। দ্বিতীয় দফার টাকা দেওয়া হবে ১ জুন থেকে। কোথাও যাতে ভুয়ো চাষির নাম নথিভুক্ত না হয়৷ পাশাপাশি প্রকৃত কৃষকরাই যাতে এই সুযোগ পান ও কিভাবে চাষিদের নাম নথিভুক্ত করতে হবে এদিন সেই বিষয়ে তিনি পরামর্শ দেন৷

তিনি আরও জানান, চাষিদের নাম নথিভুক্ত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট চাষিকে একটি স্মার্ট কার্ড দেওয়া হবে। ওই কার্ডেই চাষিদের সমস্ত বিবরণ নথিভুক্ত থাকবে। ফলে প্রত্যেকবার তাঁদের কাগজপত্র আনার প্রয়োজন হবে না। পরবর্তীকালে এই স্মার্ট কার্ড দেখিয়েই সরকারি প্রকল্পের সুযোগ পাবেন চাষিরা।

ইতিমধ্যেই জেলা কৃষি দফতরগুলি থেকে কৃষক বন্ধু প্রকল্পের ফর্ম দেওয়া শুরু হয়েছে। গত ৩১ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের সমস্ত শ্রেণির নথিভুক্ত চাষিদের জন্য কৃষক বন্ধু প্রকল্পের ঘোষণা করছেন। আর সেই প্রকল্পের কাজ নিয়ে প্রথম তিন জেলাকে নিয়ে বৈঠক করে গেলেন মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার। চাষে ক্ষতির জন্য চাষিদের আত্মহত্যার ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রকল্পের কোনো সুবিধা সংশ্লিষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত চাষির পরিবারেরা পাবেন কিনা তানিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে৷ তা দূর করতে এদিন প্রদীপ বাবু জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন স্বাভাবিক বা অস্বাভাবিক মৃত্যু হলেই প্রাপ্ত বয়স্করা যারা নথিভুক্ত কৃষক তাঁরাই এই মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন। যে সমস্ত চাষির নিজস্ব নথিভুক্ত জমি রয়েছে এমনকি বর্গাদার চাষিও তাঁদের নথি দেখালে এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন।

এই বিষয়ে তিনি বলেন, চাষ করলেই চাষের সুবিধা পেতে একর প্রতি যে টাকা দেওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন তাও পাবেন চাষিরা। তবে তাঁদের চাষ করতে হবে। চাষ না করলে এই সুযোগ পাবেন না। সমস্ত জেলায় জেলায় কৃষি আধিকারিকরা চাষিদের এই রেকর্ড নথিভুক্ত করছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত কারণে কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিতে গিয়ে রাজ্যের সিংহভাগ চাষি নাম নথিভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যাপকতা আরও বেশি। ছোট থেকে বড় এমনকি বর্গাদাররাও যাতে এই সুযোগ পান তাই তাদের নামও নথিভুক্ত করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে গোটা রাজ্যের নথিভুক্ত চাষিদেরও একটি ডাটা ব্যাংক তৈরি হয়ে যাচ্ছে। অন্যান্যদের মধ্যে এদিন হাজির ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা কৃষি দফতরের যগ্ম কৃষি অধিকর্তা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ও।