রাজ্যে বড় লগ্নি ব্রিটানিয়ার, বিনিয়োগ তিনশো কোটি


রাজ্যে বড় লগ্নি করতে চলেছে ব্রিটানিয়া ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে নামী এই সংস্থাটিকে, বুধবার বিনিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে শিল্প বিষয়ক মন্ত্রিগোষ্ঠী। সবমিলিয়ে আটটি সংস্থা লগ্নি করবে রাজ্যে৷ বিনিয়োগের পরিমাণ সর্বমোট প্রায় ৭৫০ কোটি টাকা। এমনই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নবান্নে বৈঠকের পর শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "সবমিলিয়ে ৭৫.৩৫ একর ও ৫০৬৮.১৮ বর্গ ফুট মডিউল জমি দেওয়া হবে। রাজ্য শিল্প উন্নয়ন নিগমের শিল্পতালুকেই এই জমি দেওয়া হবে।" এদিনই মুখ্যমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রের অপেক্ষা না করে তাজপুরে বন্দর তৈরি করবে রাজ্য নিজেই। তেমনই কুলপি বন্দর তৈরির কাজ শুরু হবে। পরিবেশ-সহ সব ধরনের ছাড়পত্র মিলেছে। বানতলার লেদার কমপ্লেক্সে কগনিজেন্ট-সহ সিলিকন ভ্যালিতে তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থাগুলিকে জায়গা দেওয়ার ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিগোষ্ঠী। ফলে লেদার কমপ্লেক্সকে আরও আধুনিক করা যাবে। আগামী মাসেই বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট। তার আগে যেভাবে শিল্প তালুকে জায়গা চেয়ে আবেদন জমা পড়ছে তাতে খুশি রাজ্য শিল্প দপ্তর। ১০০ বছরের পুরনো সংস্থা ব্রিটানিয়া ইন্ডাস্ট্রিজ বিস্কুট-কুকিজের ক্ষেত্রে নামী। তারা কলকাতার কাছাকাছি জমি নিতে পারে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। আরও সাতটি আবেদনকারীর চাহিদা মেনেই জায়গা ঠিক করবে রাজ্যের শিল্প উন্নয়ন নিগম।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমরা নিজেরাই তাজপুরে বন্দর করব। কেন্দ্রের জন্য আমরা তিন বছর অপেক্ষা করেছি। কুলপিতেও কাজ শুরু হয়ে যাবে। প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থান হবে।" এদিকে, শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র উল্লেখ করেন, দুই হাজার পর্যটক নিয়ে বিশাল ক্রুজ কলকাতা বন্দরে আনতে চায় একটি বেসরকারি নামী সংস্থা। নাব্যতার বিষয়টিও দেখা হচ্ছে। এই সংস্থা ক্রুজ নিয়ে আসতে শুরু করলে রাজ্যের পর্যটনে আরও উন্নতি হবে। উল্লেখ্য, কুলপিতে নদী বন্দর তৈরিতে পরিবেশ-সহ সবরকম ছাড়পত্র মিলেছে। ফলে এবার পূর্ণাঙ্গ প্রকল্প রিপোর্টের পরই পাকাপাকি ভাবে কাজ শুরু হবে। হুগলি নদীর মোহনার কাছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপিতে বন্দর গড়বে বিশ্বখ্যাত বন্দর লজিস্টিক সংস্থা ডিপি ওয়ার্ল্ড ও শিল্পপতি ময়ঙ্ক জালানের কেভেন্টার্স গ্রুপ৷

জানা গিয়েছে, বন্দরের খসড়া চুক্তি চূড়ান্ত হয় ২০০৮-তে। প্রায় ৭০০ একর জমি লাগছে। বন্দরের জলের গভীরতা ৮.৫ মিটার। নাব্যতা বাড়ানো হবে কীভাবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে বলে সূত্রে খবর। অন্যদিকে, তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরি হলে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের সুবিধা হবে। বন্দরটির গভীরতা হবে ১৫ মিটার৷ ফলে সমুদ্রগামী বড় জাহাজ বন্দরে চলাচল করতে অসুবিধা হবে না। বন্দরের জন্য ১৮ কিলোমিটার একটি চ্যানেল নির্মাণ করতে হবে গভীর সমুদ্রর থেকে। মূল রাস্তা ও রেলপথের দূরত্ব যথাক্রমে ৮ ও ১১ কিলোমিটার হওয়ায় বন্দর তৈরিতে পরিকাঠামোগত খরচ কম হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের উন্নতির স্বার্থে তাজপুরে বেসরকারি উদ্যোগে বন্দরের ঘোষণা করেন। কেন্দ্রের শর্ত মেনে নিজেদের হাতে ২৬ শতাংশ রেখে ৭৪ শতাংশ ছেড়েও দেয় রাজ্য। রাজ্যের প্রস্তাব ছিল, গঙ্গাসাগরে মুড়িগঙ্গার উপর লোহার সেতু তৈরি করে দিতে হবে।