দেওয়াল ভাঙতেই উদ্ধার মুদ্রাভর্তি কলসি! সরগরম গোয়ালতোড়

উদ্ধার হওয়া মুদ্রা।

প্রজাতন্ত্র দিবসের সকালে গুপ্তধনের খোঁজ! মাটির দেওয়াল ভাঙতেই মিলল মাঝারি মাপের কলসি। আর তাতে বোঝাই পুরনো মুদ্রা।

খবর রটতে দেরি হয়নি। গোয়ালতোড়ের হাঁড়িমারা গ্রামে সিংহ মহাপাত্র পরিবারের মাটির বাড়ির সামনে মুহূর্তে লোকারণ্য। কেউ নিয়ে এলেন ঝুড়ি, কোদাল। কেউ আবার হাত দিয়েই মাটির স্তূপের মধ্যে খুঁজলেন মুদ্রা। যাঁরা পেলেন, তাঁরা তা নিয়ে দিলেন ছুট। তাঁদের দেখে আরও বাড়ল ভিড়। পরিস্থিতি সামলাতে ডাকতে হল পুলিশ। রবিবারও দেখা গেল, পাড়ার আড্ডায় বিষয় সেই মুদ্রা। গড়বেতা ২-এর বিডিও স্বপনকুমার দেব বললেন, ''মাটির দেওয়ালের গাঁথনি ভাঙতেই প্রাচীন মুদ্রা বেরানোর খবরটা শুনেছি। সেগুলি সংরক্ষণ করা যায় কি না খতিয়ে দেখা হবে।''

ওই পরিবারের সদস্য অচিন্ত্য সিংহ মহাপাত্রের দাবি, প্রায় ১২০০ মুদ্রা পাওয়া গিয়েছে। বেশিরভাগই ১৯২১ থেকে ১৯৪২ সালের মধ্যেকার। তিনি জানান, অনেক মুদ্রায় রাজা ষষ্ঠ জর্জের ছবিও রয়েছে। ইংরেজিতে কোনওটায় লেখা ওয়ান রুপি, কোনওটায় হাফ রুপি।

আসলে মুদ্রাগুলি কিসের? ছোট বড় নানা আকারের ওই মুদ্রাগুলি তাম্র ও নিকেল মিশ্রিত ধাতব মুদ্রা বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দা ইতিহাসের শিক্ষক শঙ্কর মহাপাত্র। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুদ্রা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপিকা সুতপা সিংহ বলেন, ''যা মনে হচ্ছে মুদ্রাগুলি ব্রিটিশ আমলের। সেই সময় ষষ্ঠ জর্জের মুদ্রাও তো প্রচলিত ছিল। তবে মুদ্রাগুলি প্রকৃতই কিসের তা না দেখে বলা যাবে না।'' পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণে কলকাতা মণ্ডলের কর্তা জি মাহেশ্বরী বলেন, ''মুদ্রাগুলি না দেখে বিশদে বলা যাবে না। তবে সেই সময়কার ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মুদ্রা হতেই পারে।''

সিংহ মহাপাত্র পরিবারের পুরনো মাটির বাড়ি ভাঙা হচ্ছে। তৈরি হবে নতুন বাড়ি। বেশ কয়েক দিন ধরেই  কাজ চলছে। শনিবার মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে মাটির দেওয়াল ভাঙতেই ঝনঝন শব্দ। অচিন্ত্যের কথায়, ''আমাদের পূর্বপুরুষেরা মাটির কলসিতে এই সব মুদ্রা গোপনে দেওয়ালের ভিতরে ঢুকিয়ে রেখেছিলেন হয়তো। দেওয়াল ভাঙতেই সেই সব বেরিয়েছে।''