একশো দিনের কাজে ২ কোটি টাকার দুর্নীতি, অভিযুক্ত তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান


একশো দিনের কাজ প্রকল্পে দু'কোটি টাকা আর্থিক তছরুপের অভিযোগ। কাঠগড়ায় পূর্ব বর্ধমানের বেগপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান শিউলি মল্লিক-সহ শাসকদলের বেশ কয়েকজন নেতা৷ রাজ্যের পঞ্চায়েত দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব দিব্যেন্দু সরকারের নির্দেশে, সোমবার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ৷ মামলা দায়ের করেছেন কালনা-১ ব্লকের বিডিও৷ ওই তৃণমূল নেত্রী এবং অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে কালনা থানার পুলিশ৷

জানা গিয়েছে, ২০১১ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ওই পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় ছিল তৃণমূল। পঞ্চায়েত প্রধান ছিলেন শিউলি মল্লিক। শিউলিকে সামনে রেখে আদতে পঞ্চায়েতের সমস্ত কিছু পরিচালনা করত তার স্বামী ইনসান মল্লিক। বর্তমানে সে কালনা-১ পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ। স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই সময় পঞ্চায়েতের কাজে ব্যাপক দুর্নীতি হয়। শুধুমাত্র ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের প্রায় দু'কোটি টাকা তছরূপ করে শিউলি ও তার স্বামী৷ এই মর্মে, ব্লক ও জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানান স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। এমনকী রাজ্যে পঞ্চায়েত দপ্তর ও কেন্দ্রের ১০০ দিনের কাজ সংক্রান্ত দপ্তরেও অভিযোগ জানানো হয়। অভিযোগ পেয়ে শিউলি ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে তদন্তে নামে কেন্দ্র ও রাজ্যের সংশ্লিষ্ট দপ্তর৷ এরপরই আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয় প্রশাসনের তরফে৷

পূর্ব বর্ধমান অতিরিক্ত জেলা শাসক (সাধারণ) তথা একশো দিনের কাজ প্রকল্পে ওই জেলার অতিরিক্ত প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর অরিন্দম নিয়োগী বলেন, "একশো দিনের প্রকল্পে রাজ্যের নির্দেশে ওই পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে।" জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, গত ১৭ ডিসেম্বর প্রকল্পের তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত রাজ্যের কমিশনার জেলাশাসককে একটি চিঠি দেন। তাতে জানান, বেগপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে একশো দিনের প্রকল্পে দুর্নীতির যথেষ্ট প্রমাণ মিলেছে। এই দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে এবং এফআইআর করতে হবে। সেই নির্দেশ মতোই সোমবার বিডিও দেবলীনা সর্দার কালনা থানায় এফআইআর দায়ের করেন। কালনা-১ ব্লকের তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সদস্য মিলন ঘোষ বলেন, "তৃণমূল কংগ্রেস দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না। তাই আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। এলাকার মানুষ সকলেই জানেন স্ত্রীকে সামনে রেখে দুর্নীতি করেছেন ইনসান মল্লিক। ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। আমাদের দলের প্রতি পূর্ণ আস্থা রয়েছে। দল দুর্নীতি রুখবেই।" অভিযুক্ত শিউলি মল্লিকের স্বামী ইনসান মল্লিক বলেন, "এফআইআর হয়েছে কি না আমার জানা নেই। অভিযোগ ভিত্তিহীন। আর কিছু বলার নেই।"