নির্মাণের ১৪০০ কোটি টাকা কোথায় গেল? রামমন্দির ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগ গেরুয়া শিবিরেই


রামমন্দির নির্মাণ ঘিরে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ!  তা-ও আবার আনা হল গেরুয়া শিবিরের একাংশের তরফেই।

অযোধ্যায় বিতর্কিত জমির বাকি অংশ ফিরিয়ে দিতে তাদের আপত্তি নেই বলে গতকাল সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। তার পরেই আখাড়ায় আখাড়ায় লড়াই— রামমন্দির তৈরি করবে কে? 

এই লড়াই এতটাই যে অযোধ্যা মামলায় যুক্ত নির্মোহী আখাড়ার সীতারাম দাস অভিযোগ করেছেন, ''সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রের যাওয়া তো বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সঙ্গে যোগসাজশ। আমরা আইনজীবীকে বলে দিয়েছি, আদালতে এর বিরোধিতা করতে।'' ওই আখাড়ার দাবি, রামমন্দির নির্মাণের জন্য প্রায় ১৪০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। তার পুরো দায়িত্ব পরিষদের হাতেই তুলে দিতে চাইছে মোদী সরকার। সেই সঙ্গে প্রশ্ন, এত টাকা কোথায় গেল? কেন পরিষদ মন্দির তৈরি করবে? মামলার আর এক অংশীদার রামলালার পক্ষ থেকেও মহন্ত ধর্মদাস জানান, তাঁরাও এর বিরোধিতা করবেন। গেরুয়া শিবিরের মধ্যে একমাত্র পরিষদই গতকাল সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিল। কিন্তু তাদের মৌরসিপাট্টা মেনে নিতে চাইছেন না সাধুদের বড় অংশ।

অভিযোগ প্রসঙ্গে পরিষদের নেতা বিনোদ বনশলের জবাব, ''মন্দিরের জন্য তোলা টাকা রামজন্মভূমি ন্যাসের তহবিলে জমা রয়েছে, আয়কর বিভাগ হিসাব পরীক্ষাও করেছে। টাকা নয়ছয় হলে আগের কংগ্রেস সরকার আমাদের ছেড়ে দিত?''

বিরোধ এখানেই থামছে না। আগামিকাল প্রয়াগরাজের কুম্ভে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ধর্ম সংসদ শুরুর আগেই, দুই মঠের শঙ্করাচার্য স্বামী স্বরূপানন্দ সরস্বতীও আজ ঘোষণা করেন, ২১ ফেব্রুয়ারি অযোধ্যায় শিলান্যাস করতে যাবেন। এতে আইনভঙ্গ হবে না, কারণ এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায় সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করেনি। তার পরেও গুলি খেতে হলে খাবেন সন্তেরা। অথচ সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র যাওয়ার পর সাধুদের বুঝিয়ে মোদীর পক্ষে হাওয়া তোলার চেষ্টা করছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদের একাংশ। 

এ দিকে, গুজরাতের স্থপতি চন্দ্রকান্ত সোমপুরাকে দিয়ে অযোধ্যার ৬৭ একরের নকশা করিয়েছে পরিষদ। যেখানে বিতর্কিত ০.৩১৩ একরের চারপাশে লক্ষ্মণ, হনুমান, সীতা, গণেশের মন্দিরের পরিকল্পনা রয়েছে। সামনে বিজয়স্তম্ভ। প্রবেশের চারটি দ্বার। প্রাঙ্গণে পাঠাগার, সাধুদের ঘর, আবাসন। নকশা তৈরি মূল মন্দিরেরও। প্রায় এক একর জুড়ে সেটি হবে, আদালতের ছাড়পত্র পেলে। সূত্রের খবর, পাথরের উপর পাথর বসিয়ে মন্দির তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। ৬০ শতাংশ পাথর খোদাইয়ের কাজ শেষ।