ফিটনেসই মাহির মূলমন্ত্র, বলছেন শৈশবের কোচ

৩৭ বছর বয়সে পৌঁছেও সেই মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ফিটনেসে মরচে পড়েনি।


রাঁচীর কোল ইন্ডিয়ায় টিমে যখন তিনি খেলতেন তখন তাঁর দৌড়ে রান নিতে যে সময় লাগত, সেটা প্রায় প্রায় কুড়ি বছর পরে একই রয়েছে।

৩৭ বছর বয়সে পৌঁছেও সেই মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ফিটনেসে মরচে পড়েনি।  মহেন্দ্র সিংহ ধোনির স্কুলের কোচ কেশব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ''প্রায় কুড়ি বছর কেটে গিয়েছে। ক্রিকেট কেরিয়ারের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছেও ধোনির দৌড়ে রান নেওয়ার সময়ে কোনও হেরফের ঘটে নি। তার কারণ হল ধোনির ফিটনেস। মাহির বয়স চল্লিশের কাছাকাছি পৌঁছনোর পরেও এই ফিটনেসই হল ধোনির সাফল্যের মূলমন্ত্র।''

মাস দুই হল, রাঁচীর মেকন কলোনির জওহর বিদ্য়ামন্দির থেকে খেলার শিক্ষক পদ থেকে অবসর নিয়েছেন কেশববাবু। ধোনি ওই স্কুলে পড়তেন। খেলার শিক্ষক কেশববাবুর হাত ধরেই ধোনির ক্রিকেটে আসা। কেশববাবু বলেন, ''ধোনি রাঁচীতে থাকলে রোজ সকাল সাড়ে আটটার মধ্যে স্টেডিয়ামে চলে আসে। দুপুরে বাড়িতে বিশ্রাম নিয়ে ফের বিকেল সাড়ে পাঁচটার মধ্যে ফের আসে স্টেডিয়ামে। অনুশীলন চলে রাত ন'টা পর্যন্ত। রাঁচীতে ধোনি থাকলে  জেএসসিএ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুশীলনে আসবেই।'' কেশববাবু  জানান, শুধু তো ক্রিকেট খেলা নয়, ধোনি সব ধরনের খেলাতেই সাবলীল। শরীর ফিট রাখতে কখনও ক্রিকেট, কখনও স্নুকার, কখনও বা টেনিস খেলে। মাস কয়েক আগে রাঁচীতে একটি স্থানীয় টেনিস প্রতিযোগিতাতেও খেলেছে ধোনি। 

কয়েক বছর আগে রাঁচীর হরমুর বাড়ি থেকে রিং রোডের ফার্ম হাউসে চলে এসেছেন ধোনি। রিং রোডের বাড়িতে আধুনিক জিম থেকে স্নুকার বোর্ড, ব্য়াডমিন্টন কোর্ট সবই রয়েছে। তবু ধোনি নিজের ফার্ম হাউসে নয় রাঁচীর জেএসসিএ স্টেডিয়ামে গিয়েই অনুশীলন করতে বেশি পছন্দ করেন বলে জানালেন রাঁচীতে ধোনির ঘনিষ্ট বন্ধুরা। তাঁদের মতে, বাড়ি থেকে  স্টেডিয়ামে তাঁর মনঃসংযোগ অনেক বেশি থাকে বলেই ধোনি অনুশীলন করতে  চলে আসেন স্টেডিয়ামে।

অষ্টেলিয়ার একদিনে ম্যাচে ধোনির সাফল্যে উল্লসিত রাঁচী। ধোনি যে অন্তত বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলবেনই, এই ব্যাপারে নিশ্চিত প্রায় সবাই। অনেকের মতে, ধোনি টেস্ট ম্যাচ থেকে অবসর নেওয়ায় মাঝেমধ্যে বিশ্রাম পাচ্ছেন। তাই যখন তিনি ফিরে আসছেন একদিনের ম্যাচে তখন পুরো শক্তি নিয়ে খেলতে পারছেন।

কেশববাবু জানান, দৃষ্টিশক্তি প্রখর রাখতে ধোনি নিয়মিত স্নুকার খেলেন। আবার নিজের দৌড়নোর দক্ষতা ঠিক রাখতে স্থানীয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে ১০০ মিটার দৌড় প্রতিযোগিতাতেও নেমে পড়েন। পেশির জোর বাড়াতে খেলেন টেনিস। কেশববাবুর কথায়, ''যে কোনও ধরনের খেলার প্রতি ভালবাসাই ধোনিকে এতটা ফিট থাকতে সাহায্য করেছে।'' 
কেশববাবু জানান, সম্প্রতি যখন তাঁর ছাত্র রাঁচীতে ছিল তখন ধোনির সঙ্গে কথা হয় তাঁর। তখনই ধোনি তাঁকে বলেছিলেন অষ্টেলিয়ায় ভাল খেলতেই হবে। সে জন্য অনুশীলন অনেক বাড়িয়েও দিয়েছিলেন মাহি।। কেশববাবু বলেন, ''ধোনি জানত, অষ্ট্রেলিয়ায় একদিনের সিরিজে ওর চূড়ান্ত পরীক্ষা। তাই ব্র্যাডম্যানের দেশে একদিনের সিরিজকে ধোনি পাখির চোখ করে অনুশীলন করে গিয়েছিল।''