বিনা নোটিসে বন্ধ চা-বাগান, ১৩০০ শ্রমিকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত


মালবাজার: কথা ছিল, সকাল সকাল কাজে গিয়ে মজুরিটা পাওয়ার। কিন্তু জলপাইগুড়ির গ্রাসমোড় চা-বাগানে পৌঁছতেই শ্রমিকরা দেখলেন পুরো বিপরীত পরিস্থিতি। গেটে তালা লাগিয়ে, চা-বাগান ছেড়ে চলে গিয়েছে মালিক পক্ষ। কোনও নোটিস পর্যন্ত নেই। এতদিনের বকেয়া পারিশ্রমিক না পেয়ে মাথায় হাত প্রায় ১৩০০ শ্রমিকের।

নাগরাকাটার গ্রাসমোড় চা-বাগানে গতবছর জুলাই মাসেও দু'বার এভাবে বাগান ছেড়ে চলে গিয়েছিল বাগান কর্তৃপক্ষ। এবারও বকেয়া না মিটিয়ে বিনা নোটিসে চলে যাওয়া মোটেই মেনে নিতে পারছেন না শ্রমিকরা। তাঁদের দাবি, এই কর্তৃপক্ষ বাগান পরিচালনের যোগ্যই নয়। বারবার সমস্যা হলে, তাঁরা গা ঢাকা দিচ্ছেন। ভরসা হারাচ্ছেন শ্রমিকরা। তাই তাঁদের আরজি, নতুন মালিকের অধীনে বাগান খুলুক। বকেয়া টাকা হাতে পেয়ে ফের নতুন করে কাজে যোগ দেওয়ার সুযোগ পান শ্রমিকরা। এদিন বাগানের মূল ফটকের কাছে শ্রমিকদের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেতা জন বারলা।

এমনিতেই উত্তরবঙ্গের চা-বাগানগুলির রুগ্ন অবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধার আওতায় শ্রমিকদের আনা হয়েছে। মালিক-শ্রমিক সংগঠন-রাজ্য প্রশাসন, ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা হয়েছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা বিশেষ ফলপ্রসূ হয়নি। অন্যদিকে, বাগান অধিগ্রহণের ভুয়ো প্রতিশ্রুতির জন্য কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বারবার তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিস্থিতির তেমন কোনও উন্নতি হয়নি। উদ্যোগ নিয়ে বাগান খুললেও কোনও না কোনও কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ন্যূনতম মজুরির দাবিতে উত্তরবঙ্গের চা বাগান সংগঠনগুলির আন্দোলন চলছেই। এই অবস্থায় নতুন করে আরও একটি চা-বাগান বন্ধ হওয়ায় হতাশা বাড়ল। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে হাজারেরও বেশি শ্রমিক।