সর্বভারতীয় জয়েন্টে ৯৯.৯৯৭ পার্সেন্টাইল! রাজ্যে প্রথম শাশ্বত


ছোটবেলায় মায়ের কাছে আবদার ছিল, কম্পিউটার দিতে হবে। মা বলেছিলেন, 'জাতীয় বিজ্ঞান মেধা অন্বেষণ'-এ দেশে প্রথম হলে ল্যাপটপ পুরস্কার পাওয়া যায়। দুর্গাপুরের হেমশিলা মডেল স্কুলের শাশ্বত দত্ত সেই পুরস্কারই পেয়েছিল। এ বার সেই শাশ্বতই সর্বভারতীয় জয়েন্ট্র এন্ট্রান্সের মেন (‌জেইই-মেন) পরীক্ষায় ৯৯.৯৯৭ পার্সেন্টাইল পেয়ে রাজ্যে প্রথম হয়েছেন।

ডিএসপি টাউনশিপের হর্ষবর্ধন রোডের বাসিন্দা শাশ্বত ছোটবেলা থেকেই হেমশিলা মডেল স্কুলের ছাত্র। সপ্তম শ্রেণি থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। শাশ্বতের বাবা সুদীপবাবু দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের কর্মী। মা সুস্মিতাদেবী গৃহবধূ। সুদীপবাবু ও সুস্মিতাদেবী জানান, ছোটবেলায় দাবা খেলা পছন্দ ছিল শাশ্বতের। কিন্তু পড়াশোনার চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ কমে দাবার বোর্ডের সঙ্গে। তবে আগের মতোই অবসরে পেন ও পেনসিল দিয়ে 'স্কেচ' করতে ভালবাসে শাশ্বত।

তবে জয়েন্টে এই সাফল্যের আগে আরও বেশ কিছু পালক যোগ হয়েছে শাশ্বতের মুকুটে। ছোট থেকেই বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনায় আগ্রহী শাশ্বত। সপ্তম শ্রেণিতে এক বেসরকারি সংস্থা আয়োজিত আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে প্রথম হন। একই পরীক্ষায় দশম শ্রেণিতে তৃতীয় স্থান লাভ করেন। ২০১৭-য় জাতীয় মেধা অন্বেষণ পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম হন। ২০১৮-য় 'কিশোর বৈজ্ঞানিক প্রোত্‍‌সহন যোজনা'র (‌কেভিপিওআই) পরীক্ষায় দেশে ৯২তম স্থান পান শাশ্বত। কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক 'বেসিক সায়েন্স' পড়ুয়াদের বিজ্ঞানচর্চা ও গবেষণায় উৎসাহ দিতে বেঙ্গালুরুর 'ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স'-এর মাধ্যমে এই বৃত্তি দিয়ে থাকে। ছেলের সাফল্যে বাবা-মা তো বটেই, স্কুলের শিক্ষকেরা খুশি। এই সাফল্যের ফলে শাশ্বত দেশের বহু নামী এনআইটি বা অন্য ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সুযোগ পাবেন। কিন্তু শাশ্বত জানান, তাঁর লক্ষ্য মুম্বই আইআইটি-তে পড়া। তাই অপেক্ষা, 'জেইই-অ্যাডভান্সড' পরীক্ষার সাফল্যের। তবে স্কুলের অধ্যক্ষা অনিন্দিতা হোমচৌধুরীর কথায়, ''শাশ্বত নিশ্চিত ভাবেই প্রথম ধাপের মতোই দ্বিতীয় ধাপটিও অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে পেরিয়ে যাবে।''