উত্তরপ্রদেশে ৮০টি আসনেই একা লড়বে তারা, জানিয়ে দিল কংগ্রেস


চিত্রনাট্য মেনে অখিলেশ-মায়াবতীর জোট ঘোষণার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই উত্তরপ্রদেশে দলের রণকৌশল স্পষ্ট করে দিল কংগ্রেস। রাহুল গাঁধীর দল জানিয়ে দিল, ওই রাজ্যের ৮০টি আসনেই একক ভাবে লড়বে কংগ্রেস। রাহুল নিজে অন্তত ১৩টি জনসভা করবেন উত্তরপ্রদেশে।

গো-বলয়ের সব চেয়ে বড় রাজ্যে এসপি-বিএসপি ও কংগ্রেস মিলে জোট হয় কি না, তা নিয়ে আগ্রহ ছিল প্রবল। কিন্তু গত কাল কংগ্রেসকে বাদ দিয়েই মায়াবতী-অখিলেশ ওই রাজ্যে 'বুয়া-বাবুয়া'র জোট ঘোষণা করে দেন। তার পরেই দুবাই থেকে জোটের উদ্দেশ্যে ইতিবাচক বার্তা দিয়ে রাহুল গাঁধী জানান, ''মায়াবতী-অখিলেশের জোটের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে। তাঁরা নিজেদের মতো করে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাকে স্বাগত। ওই রাজ্যে আমরা আমাদের মতো করেই লড়াই করব।'' রাহুলের ওই বার্তা আসার পরে আর দেরি করেননি কংগ্রেস নেতৃত্ব। আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে গুলাম নবি আজাদ জানিয়ে দেন, রাজ্যের সব ক'টি আসনেই একা লড়বে কংগ্রেস।

প্রচারে অন্তত ওই রাজ্যে ১৩টি সভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাহুল গাঁধী। কংগ্রেস সূত্রে বলা হয়েছে, রাজ্যের ৮০টি আসনকে মূলত ১৩টি জোনে ভাগ করা হয়েছে। প্রতি ৬টি লোকসভা কেন্দ্র পিছু গড়ে একটি করে সভা করবেন রাহুল। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সংসদে ছুটি পড়তেই প্রচারে ঝাঁপাবেন কংগ্রেস সভাপতি। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ থেকে প্রচার শুরু করবেন তিনি। প্রথম ধাপে সভা হওয়ার কথা মোরাদাবাদ ও সহারনপুরের মতো এলাকায়।

প্রশ্ন উঠেছে, বিরোধী দলগুলির জোট না-হওয়ায় বিজেপি কি আখেরে ফায়দা পেতে চলেছে? 

অনেকেই মনে করছেন ওই রাজ্যে বিজেপি-বিরোধী ভোট এসপি-বিএসপি এবং কংগ্রেসের মধ্যে ভাগ হয়ে গেলে বিজেপিরই লাভ হবে। কিন্তু কংগ্রেস সূত্রের মতে, রাহুলের সঙ্গে বোঝাপড়া করেই এগোচ্ছেন মায়া ও অখিলেশ। কংগ্রেস একা ভোটে লড়লেও প্রধান লক্ষ্য হবে বিজেপিকে হারানো। তাই যেখানে এসপি-বিএসপির প্রার্থী শক্তিশালী, সেখানে দুর্বল প্রার্থী দেবে কংগ্রেস। আবার যেখানে বিজেপির উচ্চবর্ণের ভোট রয়েছে, সেখানে বিজেপিকে হারাতে সর্বশক্তি দিয়ে লড়বে কংগ্রেস। প্রয়োজন মতো স্থানীয় স্তরে বোঝাপড়া করা হবে এসপি-বিএসপির সঙ্গে। কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, ''সকলেই জানেন লোকসভার মূল লড়াই কংগ্রেস বনাম বিজেপির। সম মানসিকতার যে সব দল বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে প্রস্তুত, আমরা অবশ্যই তাদের সমান মর্যাদা দেব এবং সাহায্য নেব।'' বার্তা স্পষ্ট, 'একলা চলো'র পথে হেঁটেও তৃণমূল স্তরে বোঝাপড়ার প্রশ্নে দরজা খোলা রাখতে চাইছে কংগ্রেস।

লোকসভা নির্বাচনে মোদীকে হারানোই যেখানে পাখির চোখ, তখন নীতিগত ভাবে এসপি-বিএসপি জোটের বিরোধিতা করতে রাজি নন রাহুল গাঁধী। আবার এক সময়ে কংগ্রেসের গড় উত্তরপ্রদেশে মাত্র চার-পাঁচটি আসনে লড়াটাও 
দলের পক্ষে সম্ভব নয়। কর্মীদের মনোবল ধাক্কা খেতে পারে। তাই এসপি-বিএসপি জোটের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েও সব ক'টি আসনে লড়ার সিদ্ধান্তই নিতে হয়েছে কংগ্রেসকে। কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছেন, এতে ইতিবাচক বার্তা যাবে দলীয় কর্মীদের কাছে। উত্তরপ্রদেশে নিজের শক্তিতে ঘুরে দাঁড়ানোর রসদ খুঁজে পাবে দল। যা পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে দলকে ভাল ফল করতে সাহায্য করতে পারে।