স্ত্রী ও মেয়েদের উপর অ্যাসিড ছুড়ে গ্রেপ্তার ব্যক্তি


খেজুরিতে স্বামীর ছোড়া অ্যাসিডে আক্রান্ত হলেন এক যুবতি ও তাঁর দুই শিশুকন্যা। গতরাতে এই ঘটনা ঘটার পর তিনজনের চিকিৎসা চলছে তমলুক জেলা হাসপাতালে। অ্যাসিডে ঝলসে গেছে তাদের শরীরের প্রায় ৭০ শতাংশ। এদিকে এই ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিল ওই যুবতির স্বামী। পরে তল্লাশিতে নেমে উদাখালি গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে খেজুরি থানার পুলিশ।

খেজুরির দক্ষিণতলার বাসিন্দা বান্টি সেনের (নাম পরিবর্তিত) সঙ্গে বছর আটেক আগে প্রেম করে বিয়ে হয়েছিল হেঁড়িয়ার বাসিন্দা অনুপমের(নাম পরিবর্তিত)। বিয়ের পর কিছুদিন পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু, অনুপমের চায়ের দোকান ঠিকভাবে চলছিল না। তাই বিয়ের বছর খানেক বাদেই অভিযুক্ত প্রায়ই মত্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরে বান্টিকে মারধর করত বলে অভিযোগ। অত্যাচারের জেরে দুই শিশুকন্যাকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান বান্টি। তারপর মেয়েদের ভরণ-পোষণের খরচ জোগাতে কিছুদিন আগে কাজের সন্ধানে কলকাতায় যান। কিন্তু, কাজ না পেয়ে পুনরায় বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন। এর কয়েকদিন পর স্ত্রী ও দুই কন্যাকে বাড়ি ফেরাতে শ্বশুরবাড়িতে যায় অনুপম। স্থানীয়রা মধ্যস্থতা করলেও বাড়ি ফিরতে রাজি হননি বান্টি। উলটে স্বামীর নির্যাতনের সমস্ত কথা সবাইকে জানিয়ে দেন। ফলে সেখান থেকে চরম অপমানিত হয়ে বাড়ি ফেরে অনুপম। কিন্তু, সবার সামনে অপমানের প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকে। গতরাতে সেই আক্রোশ মেটাতে শ্বশুরবাড়িতে এসে দরজায় ধাক্কাধাক্কি করে। মেয়েদের নিয়ে সেসময় বান্টি টিভি দেখছিলেন। আওয়াজ শুনে কে দরজায় ধাক্কা দিচ্ছে তা জানতে চান। অনুপম নিজের পরিচয় দিয়ে বলে সে মোবাইল ফেরত দিতে এসেছে। এরপর দরজা খুলতেই অ্যাসিড ভরা বোতল নিয়ে স্ত্রী ও দুই শিশুকন্যার উপর হামলা চালায় সে। যন্ত্রণায় চিৎকার শুরু করেন বান্টি। তাঁর চিৎকার শুনে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ঘটনাস্থানে পালিয়ে যায় অনুপম।

পরিবারের লোক রাতেই বান্টি ও তাঁর দুই মেয়েকে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হেঁড়িয়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে স্থানান্তরিত করা হয় তমলুক জেলা হাসপাতালে। খেজুরি থানার OC শীর্ষেন্দু দাস জানিয়েছেন, অ্যাসিড হামলার ঘটনার খবর পেয়েই তদন্তে নেমেছেন তাঁরা। পারিবারিক অশান্তির জেরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।