পুলিশ অফিসারের পা ধরে কাঁদছেন বৃদ্ধা! দেশের সেরা থানাতেই অমানবিকতার নজির

এভাবেই পুলিশ অফিসারের পায়ে পড়েছেন বৃদ্ধা।

এই থানা দেশের সেরা তিন থানার মধ্যে একটি হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে। সঠিক রেকর্ড রাখা, কর্মী-অফিসারদের মানবিক ব্যবহারের মতো ক্ষেত্রে সেরার মুকুট মাথায় উঠেছে গত বছরই। পুরস্কার তুলে দিয়েছেন খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের সেই গুদাম্বা থানাতেই ধরা পড়ল চরম অমানবিকতার নিদর্শন। থানার এক অফিসারের সামনে হাতজোড় করে কান্নাকাটি করছেন সত্তরোর্ধ্ব এক বৃদ্ধা। কিন্তু নিরুত্তাপ ওই অফিসার দিব্যি পায়ের উপর পা তুলে বসে আছেন। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়তেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তেজপ্রতাপ সিংহ নামে ওই অফিসারকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৭৫ বছরের বৃদ্ধা ব্রহ্ম দেবী লখনউয়ের গুদাম্বা থানায় গিয়েছিলেন একটি এফআইআর দায়ের করতে। তাঁর নাতি আকাশ যাদব (২০) একটি প্লাইউডের কারখানায় কাজ করতেন। কারখানার মেশিনে জড়িয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। সেই ঘটনায় কারখানার মালিকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে গিয়েছিলেন ব্রহ্ম দেবী। কিন্তু কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার তেজপ্রতাপ সিংহ সেই অভিযোগ নিতে চাননি। তারপরই বৃদ্ধা ওই অফিসারের পা জড়িয়ে ধরেন।

এই ঘটনার একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যায়, বৃদ্ধা প্রথমে তেজপ্রতাপের সামনে হাতজোড় করে কাকুতি-মিনতি করছেন। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। কিন্তু তেজপ্রতাপ পায়ের উপর পা তুলে আরামে বসে আছেন। কোনও হেলদোল নেই। শেষ পর্যন্ত তেজপ্রতাপের পা জড়িয়ে ধরেন ব্রহ্ম দেবী। তখন অবশ্য কিছুটা নড়েচড়ে বসেছেন তেজপ্রতাপ।
এই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়তেই হইচই পড়ে যায় পুলিশ মহলে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই থানা থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, তেজপ্রতাপ সিংহকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাঠানো হয়েছে পুলিশ লাইনে। অন্য দিকে আকাশ যাদবের মৃত্যুর ঘটনায় এফআইআর দায়ের হয়েছে। খোঁজ চলছে কারখানার মালিকের। ওই ভিডিয়োটি পরীক্ষা করে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে ওই বিবৃতিতে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই প্লাইউডের কারখানায় বহু পুরনো যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়। শ্রমিকরা এবং স্থানীয়রা বহুবার এ নিয়ে প্রতিবাদ করেছেন। পুলিশেও নালিশ করা হয়েছে। কিন্তু মালিক কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। সেই কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ওই দুর্ঘটনার পর থেকেই কারখানার মালিক ফেরার।