রাতের কলকাতায় শাটল কারে নির্জন রাস্তায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা মহিলাকে

'বাঁচাও বাঁচাও' চিৎকার শুনে বাইক-অটো নিয়ে পিছনে ধাওয়া করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

একা পেয়ে জোর করে নির্জন রাস্তায় মহিলা যাত্রীকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করল শাটল গাড়ির চালক। 'বাঁচাও বাঁচাও' চিৎকার শুনে বাইক-অটো নিয়ে পিছনে ধাওয়া করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শেষ পর্যন্ত উদ্ধার করা হয় মহিলাকে। পাকড়াও করা হয় শাটলের চালককে। ঘটনাটি ঘটেছে হরিদেবপুর থানা এলাকার কবরডাঙা এলাকায়। তাড়া খেয়ে চলন্ত গাড়ি থেকে কার্যত ওই মহিলাকে ফেলে দেয় চালক। তাতে পায়ের হাড় ভেঙেছে মহিলার।

৩০ বছর বয়সী ওই মহিলা হরিদেবপুরের কবরডাঙা এলাকার বাসিন্দা। তিনি সাউথ সিটি মলে একটি শো-রুমের কর্মী। অন্য দিনের মতই তিনি বাড়ি ফেরার সময় প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড থেকে একটি শাটলে ওঠেন। তিনি বসেছিলেন চালকের পাশের আসনে। মহিলা পুলিশকে জানিয়েছেন, শাটল গাড়িটি ছিল একটি এসইউভি। প্রথমে ৮-৯ জন যাত্রী ছিলেন শাটলে।

অভিযোগকারীর স্বামী জানিয়েছেন, শনিবার রাতে ফেরার সময়ে কেওড়াপুকুর মোড়ে প্রায় সব যাত্রী নেমে যান। একদম পিছনের সিটে একজন মহিলা ছিলেন। এরই মধ্যে চালক সামনের সিটে বসা অভিযোগকারীকে উদ্দেশ্য করে কিছু অশালীন মন্তব্য করেন। মহিলা সেই মন্তব্য শুনেই প্রতিবাদ করেন। কিন্তু চালক পাল্টা তাঁকে ভয় দেখাতে থাকেন। বলতে থাকেন গাড়িতে কেউ নেই। কবরডাঙাতে মহিলা তাঁর নির্দিষ্ট জায়গায় নামার চেষ্টা করলে, চালক সেখানে গাড়ি না থামিয়ে শুনসান জুলপিয়া রোডের দিকে গাড়ি ঘুরিয়ে দেয়।

ইতিমধ্যে অভিযোগকারী গাড়ির জানলা দিয়ে সাহায্যের জন্য চিৎকার শুরু করে দেন। যোগ দেন পিছনের সিটে বসা মহিলা যাত্রীও। রাস্তার পাশে থাকা স্থানীয় যুবকরা সেই চিৎকার শুনে বাইকে করে ধাওয়া শুরু করে শাটল গাড়িটা।
 
ইতিমধ্যে পুলিশকেও খবর দেন স্থানীয়রা। পিছনে বাইকে স্থানীয়দের তাড়া করে আসতে দেখে প্রায় এক কিলোমিটার এগিয়ে গিয়ে দুই মহিলাকে শাটল থেকে নামিয়ে দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে চালক। কিন্তু স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ গাড়ির চালক কানাই দাসকে পাকড়াও করে। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবার তাতে আলিপুর আদালতে তোলা হয়। উত্তেজিত জনতা ওই শাটল গাড়িটিতে ভাঙচুরও চালায়।

পুলিশ সূত্রে খবর, চালক খেয়াল করেনি পিছনে আরও একজন মহিলা যাত্রী গাড়িতে বসে ছিলেন। সে ভেবেছিল সামনের সিটে বসা মহিলা একাই তার গাড়িতে আছেন। এতেই দুষ্কর্মের দুঃসাহস পেয়ে বসেছিল তাকে।