অপটু নার্সদের টানাটানির জের, ধড় থেকে আলাদা সদ্যজাতর মাথা


সন্তান প্রসব করতে এসে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পুরুষ কর্মী বা নার্সদের চূড়ান্ত গাফলতি ও অদক্ষতার শিকার হলেন এক মহিলা। প্রসবের সময় এতটাই জোরে গর্ভস্থ সন্তানের দেহ ধরে টান দিল স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক পুরুষ কর্মী, যে শিশুর মাথা রয়ে গেল মায়ের গর্ভে। দেহটি ছিঁড়ে বেরিয়ে এলো। এই ভয়ংকর ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের জয়সলমেঢ়ের রামগড় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। চার দিন আগে ঘটনাটি ঘটলেও নজরে আসে শুক্রবার।

এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হাসপাতালের পুরুষ কর্মী অমৃতলাল এবং তাঁর সহকারী ঝুঝর সিং৷ ঘটনার পরই নিজেদের কুকর্ম চাপা দিতে চেষ্টা করেছিল তারা। তড়িঘড়ি নবজাতককে মৃত ঘোষণা করে, চিকিৎসককে দিয়ে তা লিখিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে অভিযুক্তরা৷ কিন্তু তাদের সেই চেষ্টা ধরা পড়ে যায়। তদন্তে জানা গিয়েছে, প্রসবের সময় নবজাতকের পা ধরে অপটু হাতে হ্যাঁচকা টান মারে সহকারী ঝুঝর সিং৷ এতটাই বলপূর্বক টান মেরেছিল, যার ফলে শিশুর মাথাটি রয়ে গিয়েছিল মাতৃগর্ভে। বাকি দেহাংশ বাইরে বেরিয়ে আসে। অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। শিশুর মাথা যে ওই মহিলার গর্ভে রয়েছে, এ কথা কাউকে জানাননি দুই পুরুষ কর্মী। উলটে ওই মহিলা প্রসূতির পরিবারকে ফোন করে যোধপুরের সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয় তারা।

এরপর ওই মহিলাকে যোধপুরের উমেদ হাসপাতালে নিয়ে যায় তাঁর পরিবার। উমেদ হাসপাতালের স্ত্রী'রোগ বিশেষজ্ঞকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অভিযুক্ত দুই কর্মী জানায়, মহিলার প্রসব সম্পূর্ণ হয়েছে, কিন্তু গর্ভের ভিতর প্লাসেন্টা রয়ে গিয়েছে। উমেদ হাসপাতালের চিকিৎসকদের একটি দল অস্ত্রোপচার শুরু করেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই পুরো বিষয়টি বুঝতে পারেন তাঁরা৷ স্তম্ভিত হয়ে যান। তাঁরা দেখতে পান, গর্ভের ভিতর একটি বিকৃত শিশুর মাথা উঁকি মারছে। অস্ত্রোপচার করে তাঁরা ছিন্ন শিশুর মাথা মায়ের গর্ভ থেকে বের করে আনেন। এরপরই মহিলার পরিবারকে পুরো বিষয়টি জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রামগড় হাসপাতালের কর্মীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন মহিলার স্বামী। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। জয়সলমেঢ়ে চিফ মেডিক্যাল অ্যান্ড হেলথ অফিসার ডাঃ বি এল বাঙ্কার জানিয়েছেন, ২ পুরুষ কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। ওই রাতে ডক্টর অন ডিউটি ছিলেন ডাঃ নিখিল শর্মা। তাঁকেও কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।