দেশছাড়া হতে হবে না, নাগরিকত্ব নিয়ে সমস্ত অমুসলিমদের আশ্বাস মোদীর


শিলচরে সভার আগে মণিপুরের ইম্ফলে প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।
দেশ বিভাজনের 'ভুল' শোধরাতেই নাগরিকত্ব বিল আনা হয়েছে এবং শীঘ্রই তা সংসদে পাশ হয়ে যাবে— অসমে এসে বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সংখ্যলঘুদের (অর্থাৎ, অমুসলিমদের) এ দেশে আশ্রয় দিতে ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন বদলাতে চায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। সংসদে পেশ করা এই সংক্রান্ত বিলে প্রস্তাব করা হয়েছে, ওই তিন দেশ থেকে ভারতে আসা অমুসলিমেরা ১২ বছরের বদলে ৬ বছরের মধ্যেই নাগরিকত্ব পাবেন। 
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অসমে যে নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) তৈরির কাজ চলছে, তাতে প্রায় ৪০ লক্ষ অসমবাসীর নাম ওঠেনি। নিয়ে ধর্ম-নির্বিশেষে অসমের বাঙালিদের উৎকণ্ঠার শেষ নেই। ১৯৭১ সালের নথি সংগ্রহ করতে না-পেরে দশ লক্ষাধিক মানুষ নতুন করে আবেদন করতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে যাঁরা অমুসলিম তাঁদের আশ্বস্ত করেই এ দিন নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনের প্রসঙ্গ তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ''সমস্যার বিষয়ে আমি অবগত। কিন্তু আশ্বাস দিচ্ছি এক জন ভারতীয় নাগরিকও বিপদে পড়বেন না।'' এর পরেই নাগরিকত্ব আইন (সং‌শোধনী) বিলের প্রসঙ্গ তুলে তাঁর মন্তব্য, ''এটা মানুষের জীবন এবং ভাবাবেগের সঙ্গে যুক্ত। বিশেষ কারও সুবিধার জন্য এটা করা হচ্ছে না। করা হচ্ছে অতীতের বহু ভুল এবং অন্যায়ের প্রতিকার করার জন্য।''   

মোদীর আজকের সভা ঘিরে গত কয়েকদিন ধরেই শিলচরের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ প্রকাশ পাচ্ছিল। মোদীর সভায় না-যাওয়ার আবেদন জানিয়ে একটি সংগঠন লিফলেটও বিলি করে। কিন্তু আজ বেলা গড়াতেই রামনগরের মাঠ কানায় কানায় ভরে ওঠে। প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টার মাটি ছুঁতেই রাস্তায় উপচে পড়ে জনতা। সেই আবেগকে কাজে লাগাতে মোদীর আবেদন, ''বরাকের দু'টি আসনই আমাদের দিন। আমার উপর ভরসা রাখুন।'' উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের মোদী-ঝড়েও বরাকের একটি আসনেও বিজেপি জেতেনি।

আজ শিলচরের সভার আগে, প্রধানমন্ত্রী মণিপুরের ইম্ফলে মোদী ডলাইথাবি বাঁধ, এফসিআই গুদাম ও ১২৫ কোটি টাকায় নির্মীত ভারত-মায়ানমার চেকপোস্ট, থঙ্গল ইকো-টুরিজম কমপ্লেক্স-সহ আটটি প্রকল্পের উদ্ধোধন করেন। চূড়াচাঁদপুরে পানীয় জল প্রকল্প, আরও তিনটি মহিলা পরিচালিত বাজার, বিভিন্ন ক্রীড়া পরিকাঠামো গঠন-সহ ১৫০০ কোটি টাকার একগুচ্ছ উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাসও করেন।