২৪ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বাকে গর্ভপাতের অনুমতি কলকাতা হাইকোর্টের, তৈরি হল নয়া নজির


২৪ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বাকে গর্ভপাতের অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী গর্ভপাতের ঐতিহাসিক রায় দেন। পিএস চক্রবর্তী যিনি এসএসকেএমের প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক তাঁর তত্ত্বাবধানেই এই গর্ভপাত করানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।

গর্ভপাতের পর মেডিক্যাল রিপোর্ট জমা করারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ভ্রুণের বৃদ্ধি অস্বাভাবিক এবং মস্তিষ্কের বৃদ্ধিও স্বাভাবিক নয় তাই গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন যোধপুর পার্কের দম্পতি। এদিন সেই মামলারই রায় দেয় আদালত। রায়ে গর্ভপাতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ভারতবর্ষে ২০ সপ্তাহের পর গর্ভপাত আইনত অপরাধ। তবে এসব ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হলে আদালতের নির্দেশ নিয়ে চলতে হয়। যোধপুর পার্কের দম্পতির গর্ভের সন্তানের অবস্থা ভালো নয়, মস্তিষ্কের বৃদ্ধিও ঠিক হচ্ছিল না। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ভূমিষ্ঠ হলেও শিশুটির বাঁচার সম্ভাবনা বিশেষ নেই। শিশুটি জন্ম নিলে প্রাণসংশয় হতে পারে প্রসূতিরও। এসব দেখেই ওই দম্পতি আদালতের দ্বারস্থ হন। শুক্রবার মামলার শুনানিতে মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্ট তলব করেছিলেন হাই কোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী। সোমবার আদালতে রিপোর্ট জমা দেয় মেডিক্যাল বোর্ড। তারপরই ঐতিহাসিক রায় দেয় উচ্চ আদালত।

প্রসঙ্গত, বিকলাঙ্গ শিশু জন্মাতে পারে এই আশঙ্কায় গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন গর্ভবতী মহিলা। রাজ্যের গর্ভপাতের আইনে বিধিনিষেধ কী রয়েছে তা বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী জানতে চান। গত সপ্তাহে মামলার শুনানিতে মামলাকারী জুহি গোস্বামীর আইনজীবী অমিতাভ ঘোষ জানান, 'কলকাতা লেকরোড এলাকার বাসিন্দা অম্বুজ গোস্বামীর স্ত্রী সন্তানসম্ভবা হন। গত বছর ডিসেম্বরে অ্যাম্লবন স্ক্যামে ভ্রুনের কিছু ত্রুটি ধরা পড়ে। চিকিৎসাদের আশঙ্কা এই অবস্থায় বিকলাঙ্গ শিশু জন্মাতে পারে। কারণ ফুসফুস হৃৎপিণ্ড ও মস্তিষ্কের বৃদ্ধি ঠিকমতো হচ্ছে না। কিন্তু গর্ভাবস্থার ২৪ সপ্তাহ অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ায় গর্ভপাত করানোর জন্য আদালতের অনুমতি প্রয়োজন। সেজন্যই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন দম্পতি। সেই মামলা বিচার করেই আদালত এদিন রায় দিয়েছে।