১৫ বছর পর লিগের জোড়া ডার্বির রঙ লাল-হলুদ! নায়ক জাস্টিন, খলনায়ক রেফারি, ২ নম্বরে ইস্টবেঙ্গল


আই লিগ ২০১৮-১৯ মরসুমের দ্বিতীয় ডার্বিতেও জয় পেল লাল-হলুদ। প্রথম লেগে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ৩-২ গোলে জিতেছিল আলেহান্দ্রো মেনেন্দেজের দল। শঙ্করলালের পরিবর্তে খালিদ জামিল এসেও অবস্থাটা বদলাতে পারলেন নাষ দ্বিতীয় লেগে ফলাফল হল ২-০ ফলে, ১৫ বছর পর লিগের জোড়া কলকাতা ডার্বির রঙই হল লাল-হলুদ।


এদিন আরও একবার দুর্দান্ত ম্যাচ খেললেন জবি জাস্টিন। ৩৫ মিনিটের মাথায় তাঁর সাজিয়ে দেওয়া বল থেকেই গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন হাইমে কোলাদো। আর দ্বিতীয়ার্ধে ৭৫তম মিনিটের মাথায় কর্নারে মাতা ছুঁইয়ে নিজেই হেডে গোল করে ইস্টবেঙ্গলের ৩ পয়েন্ট পাওয়া নিশ্চিত করলেন কেরলের ফুটবলারটি। তবে ম্যাচে খারাপ রেফারিং-এর শিকার হতে হল দুই দলকেই।


শুরুর আগেই ধাক্কা
এদিন প্রথমে মোহনবাগানের প্রথম একাদশে নেরোকা ম্যাচের দলের থেকে মাত্র একটিই পরিবর্তন করেছিলেন খালিদ জামিল। ৫৬ দিন পর চোট সারিয়ে ফেরেন পিন্টু মাহাতো। তাঁকে খেলানো হয় আজহারউদ্দিন মল্লিকের পরিবর্তে। কিন্তু একেবারে ওয়ার্ম-আপ চলাকালীন জাপানি মিডফিল্ডার কিনোয়াকি চোট পাওয়ায় শুরুতেই মুশকিলে পড়ে বাগান। তাঁর জায়গায় এদিন খেলেন কিসেকা।
অপরদিকে এস্কেদার চোট সেড়ে গেলেও এদিন তাঁকে প্রথম একাদশে রাখেননি মেনেন্দেজ। কার্ড সমস্য়ায় না থাকা মনোজ মহম্মদের জায়গায় এদিন খেলেন কমলপ্রিত সিং। সোনি নর্ডেরকে ম্য়ান মার্কিংয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় চুলোভাকে।
   

সুযোগ নিল ইস্টবেঙ্গল
বড় ম্যাচে শুরু থেকেই জমে ওঠে খেলা। তবে আক্রমণ ভাগের সঙঘবদ্ধতায় শুরু থেকেই এগিয়ে ছিল লাল-হলুদ। ম্যাচের শুরুতেই গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন জাস্টিন। অপর দিকে লুযোগ এসেছিল কিংসলের সামনেও। তবে এই অংশে রেফারি ভুল সিদ্ধান্তের শিকারও হয়েছে দুই দলই। তবে রক্ষণে কিংসলের একটা ছোট্ট ভুলের বড় খেসারত দিতে হয় মোহনবাগানকে। পিছন থেকে জাস্টিনকে লক্ষ্য করে লম্বা বল তুলেছিলেন চুলোভা। সেই বল ঠিকমতো ক্লিয়ার করে পারেননি কিংসলে। সেই সুযোগ বলটি ছিনিয়ে নিয়ে বক্সের মধ্যে হাইমের জন্য সাজিয়ে দেন জাস্টিন। ডান পায়ের হাল্কা টোকায় জায়গা করে নিয়ে শিল্টনকে পরাস্ত করেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার। বিরতিতে ফল ছিল ১-০।
   

মোহনবাগানের গোল বাতিল
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই মোহনবাগান ঝড় তুলেছিল। ম্যাচের ৫৩ মিনিটে লাল-হলুদ গোলে বল জড়িয়ে গেলেও লাইন্সম্য়ান সেই গোল বাতিল করেন কালদেইরার হ্যান্ডবল করেছেন এই যুক্তিতে। এই সিদ্ধান্তটি যথেষ্ট বিতর্কিত। কর্নার থেকে কিংসলের হেড বারে লেগে ফিরে আসে। সেই বল কালদেইরা হেড করে ডিকার জন্য নামিয়ে দেন। ডিকার শট কালদেইরার হাত ছুঁয়ে যায় বলে জানিয়েছেন লাইন্সম্য়ান।
   

নিশ্চিত করলেন জবি
ঝড় সামলে ধীরে ধীরে খেলায় ফেরে ইস্টবেঙ্গল। এদিন পাসিংয়ে চোখে পড়ার মতো পরিবর্তন দেখা গিয়েছে লাল-হলুদের খেলায়। সারা ম্যাচেই অজস্র পাস খেলেছে মেনেন্দেজের ছেলেরা। যার কোনও জবাব মোহনবাগানের কাছে ছিল না। তবে জয়ের গোলটি এসেছে সেট পিস থেকে। রালতের নিখুঁত কর্নার থেকে হেডে গোল করে লিগে তাঁর অষ্টম গোলটি করে যান জাস্টিন।

   

জঘন্য রেফারিং
সবশেষে বলতেই হবে খারাপ রেফারিং-এর কথা। যার জন্য কখনই খুব উচ্চ মানে পৌছলো না ২৪তম আইলিগ ডার্বি। লাইন্সম্যান অ্যান্টনি আব্রাামের মোহনবাগানের গোল বাতিল নিয়ে বিতর্ক তো রয়েইছে। সেই সঙ্গে কখনও ইস্টবেঙ্গল গোলের সামনে থাকা অবস্থায় খেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে খেলোয়াড়ের চোট পাওয়ার কারণ দেখিয়ে। কখন শিল্টন পাল হাইমেকে ফাউল করলে দেখতে পাননি রেফারি সিআর শ্রীকৃষ্ণ। কখনও হাইমে বেঁচে গিয়েছেন নিশ্চিত কার্ড দেখার হাত থেকে। ভারতীয় ফুটবলের সবচেয়ে বড় ম্যাচে এত খারাপ রেপারিং হওয়াটা কিন্তু ভারতীয় ফুটবলের পক্ষে মোটেই ভাল বিজ্ঞাপন নয়।