এখনও ট্রমায় খড়দার নির্যাতিতা


সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া ছেলেকে টিউশন পড়তে দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে গণধর্ষণের শিকার হন খড়দা পাতুলিযার এক বধূ। তাঁকে রাস্তা থেকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় পাতুলিয়া শিবমন্দির এলাকার নির্মীয়মাণ একটি বাড়ির মধ্যে। সেখানে তাঁকে ধর্ষণ করে পর পর ৪ জন। দুষ্কৃতীরা মুখ ঢেকে ছিল। বুধবার রাতের ঘটনা। এলাকার মানুষ নির্যাতিত বধূকে উদ্ধার করে পানিহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেন। তাঁর প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়।  চিকিৎসার পর তাঁর রক্তক্ষরণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণ হলেও ট্রমার মধ্যে রয়েছেন তিনি। অভিশপ্ত রাতের কথা মনে পড়লেই আঁতকে উঠছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন খড়দা থানার আইসি মৃত্যুঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাঁকে অক্সিজেন দিতে হয়। জানা গেছে, নির্যাতিতার স্বামী বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে পুজো করে বেড়ান। বাড়িতে শ্বশুর, দেওর, ননদ রয়েছেন। পুলিস জানিয়েছে, নির্যাতিতার বয়স চল্লিশ।  বুধবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তিনি ছেলেকে প্রাইভেট শিক্ষকের বাড়িতে পড়তে দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ি থেকে ১৫০ মিটার দূরে একজন পেছন থেকে তাঁর হাত টেনে ধরে। অন্য একজন তাঁর মুখ চেপে ধরে নির্মীয়মাণ একটি বাড়ির কাছে নিয়ে যায়। ওখানে আগে থেকেই ছিল আরও দু'‌জন। তার পর ৪ জন মিলে তাঁর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। গণধর্ষণের পর গা–ঢাকা দেয় দুষ্কৃতীরা। অত্যধিক অত্যাচারে জ্ঞান হারান নির্যাতিতা। এক ঘণ্টা ওই অবস্থায় থাকার পর তাঁর জ্ঞান ফিরলে তিনি কোনওরকমে উঠে স্থানীয় একটি বাড়ির দরজায় ধাক্কা দিয়েই ফের জ্ঞান হারান। ওই বাড়ির লোক দরজা খুলে দেখেন, এলাকার এক বধূ দরজার কাছে পড়ে আছেন। তাঁরাই খবর দেন তাঁর বাড়িতে। নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের অনুমান, দুষ্কৃতীরা পাতুলিয়া এলাকার বাসিন্দা। ওই নির্মীয়মাণ বাড়িতেই দুষ্কৃতীদের আড্ডা। সেখানে নিয়মিত মদ–জুয়ার আড্ডা বসে। নির্যাতিতা যাতে চিনতে না পারেন, সে–জন্যে সকলে মুখ ঢেকে ছিল। পুলিস এ ঘটনায় দু'‌জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। খড়দার বুকে আগে কখনও গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। স্বাভাবিকভাবেই খড়দা এলাকার মানুষের মধ্যে এ ঘটনা প্রচণ্ড আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের খুঁজে বের করে কঠোর সাজার দাবি জানিয়েছে সর্বস্তরের মানুষ।‌

নির্যাতিতার পরিবারের ওপর হামলা
শীতের রাতে রাস্তার পাশে আগুন পোহাচ্ছিলেন বারাসত ইন্দিরা কলোনির বাসিন্দা এক যুবতী। আচমকাই সোনা নামে স্থানীয় এক যুবক ওই যুবতীকে পিছন থেকে জাপটে ধরে তার শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। এর পরে ওই যুবতীর চিৎকারে পালিয়ে যায় ওই অভিযুক্ত। শ্লীলতাহানির বিষয়টি ওই যুবক অস্বীকার করায়, বুধবার সালিশি সভা বসে ওই এলাকায়। অভিযোগ, ওই সালিশি সভা শুরু হতেই নির্যাতিতার পরিবারকে লক্ষ্য করে কটূক্তি করা হয়। একইসঙ্গে বিভিন্ন ভাবে তাদের হুমকিও দেওয়া হয়। প্রকাশ্যে ওই হুমকি দেওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ করায়, নির্যাতিতার পরিবারের ওপর হামলা চালায় অভিযুক্ত ও তার সঙ্গী–‌সাথীরা। ওই যুবতীর বাড়িতে ঢুকেও অভিযুক্ত ও তার দলবল হামলা চালায় বলে অভিযোগ। মারধর করা হয় নির্যাতিতার দিদি ও জামাইবাবুকেও। যদিও নির্যাতিতার পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিসের কাছে অভিযোগ জানানোর পরই অভিযুক্তের পরিবারের পক্ষ থেকেও পাল্টা অভিযোগ করা হয়। পুলিস জানিয়েছে, শ্লীলতাহানি ও মারধরের ঘটনায় ইতিমধ্যেই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই এলাকায় উত্তেজনা থাকায় চলছে পুলিসি টহলও। নির্যাতিতা ওই যুবতী জানান, ফের হামলার আশঙ্কায় আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন তাঁরা। তাঁর দিদি ও জামাইবাবুর আঘাত গুরুতর বলেও জানিয়েছেন ওই যুবতী।‌