‌কার্ডে হোটেলের ভাড়া, খরচ অতিরিক্ত ২ শতাংশ

দিঘা: আগে নালিশ ছিল, ভিড়ের সময় পর্যটকদের কাছ থেকে মাত্রাতিরিক্ত হোটেল ভাড়া আদায়ের। যা নিয়ে বেশ কয়েকবার দিঘার হোটেল মালিকদের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। হোটেলগুলির বিরুদ্ধে এবার অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে অনলাইন পেমেন্টের ক্ষেত্রে। অনলাইন পদ্ধতিতে হোটেলে থাকা–খাওয়ার দাম দিতে নাকি দুই শতাংশ অতিরিক্ত টাকা দিতে হচ্ছে! আর এতেই বিরক্ত পর্যটকরা।
অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ শুনেই হোটেল মালিকদের ওপর বেশ ক্ষুব্ধ দিঘা–শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান সাংসদ শিশির অধিকারী। এই ধরনের ঘটনা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, '‌বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি শীঘ্রই হোটেল মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।'‌ হোটেল সংগঠকরাও বলছেন, '‌এই ধরনের ঘটনা কোনওভাবে কাম্য নয়।'‌ দিঘা–শঙ্করপুর হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, '‌কারা এমন করছে, তা আমরা খোঁজ নেব। দ্রুতই এ বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে।'‌

নগদে লেনদেন কমানোর লক্ষ্যে চালু হয়েছিল অনলাইন পেমেন্ট পদ্ধতি। দিঘার প্রায় সব হোটেলেই এখন নগদের পাশাপাশি এটিএম বা ডেবিট কার্ড সোয়াইপ করে অনলাইন সিস্টেমে হোটেলর দাম মেটানোর ব্যবস্থা রয়েছে। পর্যটকদের দু'‌ভাবেই টাকা মেটানোর কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু দাম নেওয়ার সময়ই (অনলাইন পেমেন্টের ক্ষেত্রে) কেটে নেওয়া হচ্ছে আরও দুই শতাংশ বেশি টাকা। নগদের ক্ষেত্রে অবশ্য লাগছে না অতিরিক্ত ২ শতাংশ টাকা। নতুন বছরে দিঘা বেড়াতে এসে এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন অনেক পর্যটকই। অতিরিক্ত টাকা দিতে গিয়ে প্রায় সকলেই অশান্তিতে জড়িয়ে পড়ছেন হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।

এমনই অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন পুরুলিয়া থেকে সবান্ধবে ঘুরতে আসা সেচ দপ্তরের কর্মী বিধান ব্যানার্জি। নিউ দিঘার এক নামকরা হোটেলের বিরুদ্ধে অনলাইন পেমেন্টের ক্ষেত্রে ওই অতিরিক্ত ২ শতাংশ টাকা আদায়ের অভিযোগ তুলেছেন তিনি। বললেন, '‌নগদে লেনদেন কমানোর জন্য সারা দেশ তথা রাজ্যে বিভিন্ন ভাবে জনসাধারণকে যখন উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে, তখন উল্টো স্রোতে হঁাটছেন দিঘার হোটেল ব্যবসায়ীরা। সর্বত্রই এখন কার্ডে বিল মেটানোর প্রয়াস শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র দিঘায় কার্ডে পেমেন্ট করতে হলে অতিরিক্ত ২ শতাংশ সার্ভিস চার্জ দিতে হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন শহর ও পর্যটন কেন্দ্রে ঘুরেছি। কিন্তু এই ধরনের প্রতারণা অন্য কোথাও দেখিনি।'‌ নিউ দিঘার ওই হোটেলের মালিক আশিস প্রধান অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন অভিযোগের কথা। তঁার বক্তব্য, '‌অনলাইন পেমেন্টের জন্য ব্যাঙ্কে ২ শতাংশ সার্ভিস চার্জ নেয়। তাই ওই টাকা পর্যটকের কাছ থেকে নেওয়া হয়।'‌