চন্দা দোষীই, বন্ধ সব আর্থিক সুবিধা


কিছু দিন আগেই আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সিইও চন্দা কোছরের নামে এফআইআর দায়ের করেছিল সিবিআই। অভিযোগ তুলেছিল, ভিডিওকনকে ৩,২৫০ কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুর করা নিয়ে প্রতারণা ও দুর্নীতির। সপ্তাহ গড়াতে না গড়াতেই ওই ঋণ কাণ্ডে তদন্ত চালানো অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বি এন শ্রীকৃষ্ণের নেতৃত্বাধীন তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জানাল, ঋণ মঞ্জুরের ক্ষেত্রে নিয়মই ভেঙেছেন চন্দা। তা-ও আবার এক নয়, একাধিক। 
রিপোর্ট সামনে আসতেই বুধবার সন্ধ্যায় চন্দার বিরুদ্ধে একগুচ্ছ কড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসরকারি ব্যাঙ্কটির পর্ষদ। ঘোষণা করেছে, গত অক্টোবরে চন্দা ইস্তফা দিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে সরে গেলেও, তাদের নীতি অনুযায়ী সেই প্রস্থানকে ধরা হবে গুরুতর অন্যায়ের শাস্তিস্বরূপ তাঁর বরখাস্ত হিসেবেই। সেই সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হবে অবসরকালীন সমস্ত আর্থিক সুবিধা। এর মধ্যে পড়বে মেটানো হয়নি এমন বোনাস বা ইনক্রিমেন্ট, স্টক অপশন, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত আর্থিক সুবিধা ইত্যাদি।

শুধু তা-ই নয়, ২০০৯ সালের এপ্রিল  থেকে ২০১৮ সালের মার্চ পর্যন্ত যত টাকা বোনাস দেওয়া হয়েছে, চন্দাকে ফিরিয়ে দিতে হবে তার প্রতিটি পাই-পয়সা। বিষয়টিতে আরও কিছু পদক্ষেপ করা হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। উল্লেখ্য, ওই ২০০৯ সালের মে মাসেই আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের সিইও-এমডি পদে বসেছিলেন কোছর। ২০১১ সালে পান পদ্মভূষণ সম্মান।

ব্যাঙ্কের সিদ্ধান্ত শোনার পরে কোছর বলেন, যে আইসিআইসিআই গোষ্ঠীতে দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে নিষ্ঠা ও পরিশ্রমের সঙ্গে কাজ করেছেন, তাদের এ হেন সিদ্ধান্তে  তিনি 'হতাশ ও মর্মাহত'। 
এই রিপোর্ট একই সঙ্গে প্রবল অস্বস্তিতে ফেলেছে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ককেও। কারণ একেবারে শুরুতে কোছরের  বিরুদ্ধে ভিডিওকনের ঋণ মঞ্জুরি নিয়ে স্বজনপোষণ ও স্বার্থের সংঘাতের অভিযোগ ওঠার পরে বেসরকারি ব্যাঙ্কটির পর্ষদ তাঁর পাশেই দাঁড়িয়েছিল। জানিয়েছিল, তারা মনে করে না কোনও রকম পক্ষপাতিত্ব করেছেন চন্দা। এমনকি জোর দিয়ে এটাও বলেছিল, তাদের ঋণ মঞ্জুরির প্রক্রিয়ায় নজরদারি এতটাই কড়া যে, কোনও কর্মীর পক্ষে সেটিকে প্রভাবান্বিত করা সম্ভব নয়। এমনকি শীর্ষ পদের কেউ হলেও।

এরই মধ্যে ব্যাঙ্কের সিইও সন্দীপ বক্সী জানান কোছরের সম্পর্কে তাঁদের বিবৃতি জারি করার কথা। ঋণ কাণ্ডে সিবিআইয়ের এফআইআরে যে বক্সীর নামও রাখা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে চন্দার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিল তারা। তাতে নাম ছিল চন্দার স্বামী দীপক কোছর, ভিডিওকন এমডি বেণুগোপাল ধুত ছাড়াও আরও কিছু ব্যক্তি ও সংস্থার। অভিযোগ ছিল, ভিডিওকন কর্ণধার বেণুগোপাল ধুতকে ঋণ মঞ্জুরিতে হাত ছিল চন্দার। যে ঋণ মঞ্জুর হওয়ার পরেই দীপকের সংস্থায় লগ্নি করেছিলেন ধুত। ফলে ওঠে স্বার্থের সংঘাতের অভিযোগ।