আছড়ে পড়ল ‘পাবুক’, ৭৫ কিলোমিটার বেগে ক্রান্তীয় ঝড়ে লন্ডভন্ড থাই-দ্বীপের উপকূল


ক্রান্তীয় ঝড় 'পাবুক' সাইক্লোনের রূপ নিয়ে আছড়ে পড়ল থাইল্যান্ডে। 'পাবুক'-এর তাণ্ডবে থাইল্যান্ডের পূর্ব উপকূল লন্ডভন্ড হয়ে যায়। প্রবল ঝড়ে সমুদ্র উত্তাল, ৭৫ কিলেমিটার বেগে বইছে ঝড়। বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়েছে সৈকতে। তারই জেরে এক মৎস্যজীবীর মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় সময় দুপুর পৌনে একটা নাগাদ পাক পানাঙ্গে জেলায় খাঁড়ি উপকূলে আছড়ে পড়ে 'পাবুক'।


লন্ডভন্ড পাক পানাঙ্গ
প্রবল ঘূর্ণির দাপটে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে পাক পানাঙ্গ। উপড়ে পড়েছে গাছ। বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে তার ছিড়ে একাকার কাণ্ড। তারপর নাগাড়ে বৃষ্টি চলছে। থাইল্যান্ডের দ্বীপাঞ্চলে আছড়ে পড়ার পর ঝড় ক্রমশ পশ্চিম দিকে এগোচ্ছে। থাইল্যান্ডে সতর্কতা জারি করা হয়েছে হরপা বান ও ভূমিধসের।
   

পর্যটকরা আটকে দ্বীপে
পাবুকের কারণে বৃহস্পতিবার থেকেই আকাশ পথ ও জলপথে পরিবহণও স্থগিত করে দেওয়া হয়েছিল। থাইল্যান্ডের সমুদ্র সৈকত থেকে পর্যটক শূন্য করে দেওয়া হয়। তবে দ্বীপাঞ্চল অনেক পর্যটক ফিরতে চাইলেও ফিরতে পারেননি, কোনও পরিবহণ না থাকায়।

   
বিচ্ছিন্ন দ্বীপ, পর্যটকরা বিপাকে
কমপক্ষে দু-হাজার পর্যটক আটকে রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে, কোহ সামুই, কোহ পানাঙ্গ, কোহ তাও, ফুকেত ও কেপ ফি দ্বীপ। তবে পূর্ব উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হয় আগে থেকে।
   

আছড়ে পড়ছে বিশাল ঢেউ
পাবুক আছড়ে পড়ার পর খাঁড়ি উপকূলে বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়তে থাকে। এক-একটা টেউয়ের উচ্চতা পাঁচ মিটার থেকে ছয় মিটার। আন্দামান সাগরও ফুঁসতে শুরু করে। থাইল্যান্ডের পশ্চিম উপকূলে আন্দামান সাগরের ঢেউয়ের উচ্চতাও তিন মিটারের বেশি। শনিবারও সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হয়েছে।
   

পাবুকের অভিমুখ আন্দামান
উল্লেখ্য, দক্ষিণ চিন সাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় পাবুক ধেয়ে আসছে আন্দামান সাগরের দিকে।শনিবার অর্থাৎ ৫ জানুয়ারি আন্দামানে এসে পৌঁছনোর কথা ঘূর্ণিঝড়ের। ৬ তারিখ তা দ্বীপপুঞ্জ পেরিয়ে বেরিয়ে যাবে। পোর্ট ব্লেয়ার থেকে ১৫০০ কিমি দূরে রয়েছে ঘূর্ণিঝড়টি। ধীরে ধীরে তা মায়ানমার উপকূলের দিকে এগিয়ে যাবে। পাবুক এর জেরে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হতে পারে।
   

ওড়িশায় সতর্কতা জারি
ইতিমধ্যে ওড়িশা সরকার ৭টি জেলায় সতর্কতা জারি করেছে। বালাসোর, ভদ্রক, জগতসিংপুর, কেন্দ্রপাড়া, পুরী, গঞ্জম, খুর্দা জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে মাছ ধরতে যাবেন কিনা তা নিয়ে এখনও কোনও বার্তা দেওয়া হয়নি। তবে আবহাওয়া দফতর গভীর সমুদ্রে না যেতে সতর্ক করেছে।
   

বাংলার শীতে কোপ পাবুকের
এর জেরে পড়শি রাজ্য বাংলার আবহাওয়াতেও যে বিঘ্ন ঘটবে তা বলাই বাহুল্য। ৪০-৫০ কিমি বেগে হাওয়া বইবে উপকূলবর্তী অঞ্চলে। তা বেড়ে ৭৫ কিমি প্রতি ঘণ্টায় পৌঁছতে পারে। বাংলায় শীতের আমেজ এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে কমতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।