শাটডাউনে ‘সোর্স’, তরুণ কর্মী খোয়াচ্ছে এফবিআই

আমেরিকায় এখনও অব্যাহত আংশিক শাটডাউন।

'সোর্স' হারাচ্ছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই! 

মাস পেরিয়ে গেলেও আমেরিকায় আংশিক শাটডাউন ওঠার নাম নেই। আর এই অচলাবস্থায় ফ্যাসাদে পড়েছে এফবিআইয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা। সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত তদন্তও ধাক্কা খাচ্ছে। বেশ কয়েকটি জঙ্গিগোষ্ঠীর ভিতরে এফবিআইকে খবর জোগানোর যে সব লোক ছিল, তাদের আর হাতে রাখা যায়নি বলে সংস্থারই কিছু অফিসার সূত্রে খবর মিলেছে।

গোয়েন্দা সংস্থার ওই অফিসারেরা নিজেদের নাম গোপন রেখে 'এফবিআই এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন' নামে একটি গোষ্ঠীর মাধ্যমে এক রিপোর্টে এই সব তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন। এর আগে এফবিআইয়ে কোনও দিন এমনটা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট অফিসাররা। তাঁরা বলেছেন, অর্থের অভাবে বিশ্ব জুড়ে নানা অভিযানে রাশ টানতে হচ্ছে।  দেশের সব চেয়ে লম্বা শাটডাউনে আখেরে দেশেরই সব চেয়ে বড় ক্ষতি হচ্ছে— আপস করতে হচ্ছে জাতীয় নিরাপত্তার মতো বিষয়ের সঙ্গে।

এক অফিসারের দাবি, ''শাটডাউনে আমরা কিছু করেই উঠতে পারছি না। শত্রুরা বুঝতে পারছে, এ বার তারা যা খুশি করতে পারে।'' এফবিআই স্বাভাবিক ভাবেই এই রিপোর্ট থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছে। এক বিবৃতিতে তাদের দাবি, ''এফবিআই এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। 'ভয়েসেস ফ্রম দ্য ফিল্ড: এফবিআই এজেন্ট অ্যাকাউন্টস অব দ্য রিয়্যাল কনসিকুয়েন্সেস অব দ্য গভর্নমেন্ট শাটডা‌উন' নামে তারা যে রিপোর্ট বার করেছে, তার সঙ্গে এফবিআইয়ের কোনও সম্পর্ক নেই।''
যে সব গোপন সূত্রে খবর আসে, তাদের অর্থ জোগাতে না পেরে বড়সড় চাপের মুখে পড়ছে এফবিআই— দাবি ওই অফিসারদের। তাঁদের বক্তব্য, তথ্য তো হাতছাড়া হচ্ছেই, পাশাপাশি 'সোর্স'দেরও হারাতে হচ্ছে। এক অফিসার যেমন বলেছেন, ''এটা তো কোনও সুইচ নয় যে ইচ্ছে হল অন করলাম, আবার ইচ্ছে হল, অফ করে দিলাম!'' 

এমএস-১৩ নামে একটি ভয়ঙ্কর হিংস্র দুষ্কৃতীদলের উপরে সম্প্রতি কড়া নজর রাখছিল গোয়েন্দা সংস্থা। এরা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোর শত্রু। সেই গোষ্ঠীকে চোখে চোখে রাখার কাজেও বাধা পড়েছে বলে জানাচ্ছেন অফিসারেরা। আর এক জন বলছেন, ''শাটডাউনের পর থেকে আমরা কোনও স্প্যানিশ জানা লোক জোগাড় করতে পারছি না। আমাদের হাতে বেশ কয়েক জন স্পেনীয় তথ্য সংগ্রহকারী আছেন। এখন তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে নানা ঝক্কি পোয়াতে হচ্ছে।'' এফবিআই এ ব্যাপারেও কোনও মন্তব্য করেনি।  
শাটডাউনের জেরে এফবিআইয়ের গোয়েন্দা-বিশেষজ্ঞ-সহ অন্তত ৫ হাজার সদস্যকে আপাতত বাড়িতে বসে থাকতে বলা হয়েছে। সংস্থার মোট ৩৫ হাজার কর্মী এ মাসের শেষেও বেতন পাবেন না। শাটডাউন আরও গড়ালে শুধু 'সোর্স' নয়, তরুণ কর্মীদেরও খোয়াবে এফবিআই— এমনটাই জানিয়েছেন অফিসারেরা। তাঁদের কথায়, ''তরুণ ছেলেমেয়েরা বলছে, শাটডাউন না উঠলে অন্য জায়গায় চলে যাব।''